শিক্ষার্থীদের বাঁচিয়ে না ফেরার দেশে সেই শিক্ষিকা
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২১ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, বিমান বিধ্বস্তের পর ঘটনাস্থলে মাহরিন চৌধুরী নিজের শরীরের একটি অংশ দগ্ধ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিজেই ঠিকঠাক মতো ঘটনাস্থল থেকে বের হতে পারেননি। ৪৬ বছর বয়সী এই শিক্ষিকাকে গুরুতর আহত অবস্থায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে সোমবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ন ইনস্টিটিউটের একটি সূত্র তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তার শরীরের ১০০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ফাহিম খান এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, ‘আমি ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি, সামনে দেখি শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। কাছে যেতেই দেখি টেবিলে কয়েকজন এমনভাবে পুড়েছে, তাদের অস্তিত্বই বোঝা যাচ্ছে না। আরেকটা রুমে দেখি একজন ম্যাম কয়েকজন শিশুকে বুকের মধ্যে আগলে রেখেছেন। শিশুরা তেমন কিছু না হলেও ম্যামের অবস্থা খুবই খারাপ। তার পুরো পিঠ আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি তখনও আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে শিশুদের আগলে রেখেছেন। আমি তখন দুজন ছোট বোনকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। পরে জেনেছি, ম্যামকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
ফাহিম খান বলেন, শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর এই আত্মত্যাগ তাকে শিক্ষার্থীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার উৎস করে রাখল।