আবু সাঈদ হত্যায় এসি ইমরানকে আসামি করার দাবি ভাইয়ের
২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রথম শহীদ হোন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ১৬ জুলাই আন্দোলনের সময় বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় পুলিশ। যে হত্যার দৃশ্য দেখে চোখের পানি ফেলেছিল দেশ-বিদেশের মানুষ। ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল সারা দেশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ৩০ জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। চারজন আগে থেকে আটক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তবে এই ৩০ জনের মধ্যে এক পুলিশ অফিসারকে আসামি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই ও মামলার অভিযোগ দাখিলকারী মো. রমজান আলী।

১৬ জুলাই এনটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবু সাঈদের বড় ভাই মো. রমজান আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যার ভিডিওতে দেখা যায় একজন পুলিশ গুলি করে তাকে হত্যা করে। আবু সাঈদের হত্যার পর তার রক্তের ওপর পাড়ি দিয়ে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা রয়ে গেছে। আমরা মামলা করার সময় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আবু সাঈদকে হত্যার নেতৃত্বে থাকা পরশুরাম থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেনকে আসামি করি। অথচ তাকে আইসিটি মামলার আসামি করা হয়নি। অথচ রংপুরে মামলা করার সময় সিসিটিভি ফুটেজ ও আবু সাঈদের সহপঠীদের নিয়ে মামলা করি। সেখানে মো. আল ইমরান হোসেনকে ৫ নম্বর হত্যার আসামি করা হয়। অথচ আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আল ইমরান হোসেনের ত্রুটি খুঁজে পাননি। আমি শুনেছি এ পুলিশ কর্মকর্তা তিন কোটি টাকার জায়গা বিক্রি করে মামলা থেকে নাম কাটাতে বাণিজ্য করেছে। আমি বলি অপরাধীকে টাকার বিনিময়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাকে আসামি করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এক বছরেও বিচার হয়নি। আমাদের চাওয়া-পাওয়া বর্তমান সরকারের সময়ে যেন বিচার শেষ হয়।’
রমজান আলী তার ছোট ভাই শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতি সম্পর্কে বলেন, ‘আবু সাঈদ পঞ্চম শ্রেণি এবং অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। আবু সাঈদের মেধার কারণে স্কুলের শিক্ষকরা সবাই আমাদের সম্মান করতো। সে ছিল আমাদের বংশের প্রদীপ। কিন্তু অকালে আমার ছোট ভাইটাকে কেড়ে নিয়েছে। তাকে গুলি করে হত্যার পর চার ঘণ্টা ধরে লাশ গুম করে রেখেছিল। এনটিভির নিউজের কারণে আমরা আবু সাঈদের লাশ পেয়েছি। অনথ্যায় লাশও পেতাম না। চার ঘণ্টা পর যখন লাশ ফেরত দিল, তখন জানাজাতেও বাধা দিয়েছে। দ্রুত জানাজা করে কবর দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিল। ইমামতি করা হুজুরকে পর্যন্ত ঘর ছাড়া করা হয়। অথচ এখনও বিচার হয়নি।’

প্রসিকিউশন ও তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, আবু সাঈদ হত্যায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আবু সাঈদের ভাই চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ জমা দিলে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে তদন্ত সংস্থা। তবে ঘটনার সাথে আবু সাঈদ হত্যার গুরুত্বপূর্ণ এ আসামির সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি এ কারণে আসামি করা হয়নি।
এ বিষয়ে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আবু সাঈদের ভাই আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের নিকট একটি অভিযোগ জমা দেয়। সেই অভিযোগের আগেই আমরা দুই মাস তদন্ত করি। অভিযোগ জমার পর আরও ৪ মাস ১ দিন যাবত তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষে গত ২৪ জুন ২০২৫ তারিখে প্রসিকিউশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। প্রতিবেদনে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসিসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এসি আল ইমরান হোসেনের বিষয়ে কোনো তথ্য না পাওয়ায় তাকে আসামি করা হয়নি।’

এ বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন,‘ এ মামলায় ইমরানকে সাক্ষী করা হয়েছে। তবে কোনো সাক্ষী যদি তার নাম বলেন তাহলে পুনরায় আসামি হতে পারে, অথবা পুনরায় তদন্তেও আসামি করা যায়।’
এর আগে রাজসাক্ষী হতে হলে কীভাবে হতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে এ প্রসিকিউটর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে হলে আসামি হওয়া শর্ত। রাজসাক্ষীকে অপরাধের সাথে জড়িয়ে সম্পূর্ণ সত্য সাক্ষ্য দিতে হয়।’ ইমরানকে কেন আসামি করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্ত সংস্থা হয়তো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি। তবে কারও বিরুদ্ধে কোনো তথ্য পেলে তদন্ত সংস্থাকে দিতে হবে, তিনি পুনঃতদন্ত করে আসামি করতে পারবেন।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় পরশুরাম জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আল ইমরান হোসেন। ৫ আগষ্টের পর দিন থেকে তিনি কর্মে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. মজিদ আলী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সে (আল ইমরান হোসেন) গরহাজির (পালাতক)। ৫ তারিখ পরবর্তী সময়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে তার কোনো তথ্য নেই। তার কাজের কথা বিগত কমিশনার বলতে পারবেন, যেহেতু তার সঙ্গে কাজ করেছেন।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে আল ইমরানের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘৫ আগস্ট তিনি সর্বশেষ কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এরপরে তিনি আর যোগদান করেননি। এসি আল ইমরান হোসেন মেডিকেল ছুটি দিয়ে রেখেছেন। তিনি অফিসিয়ালি কোনো সিমকার্ড ব্যবহার করছেন না। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায়।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কশিনার হাবিবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত ৫ আগষ্টের পরদিন থেকে এসি আল ইমরান হোসেন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে আছেন। এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালায় সুত্র জানায়, মো. আল ইমরান হোসেন ৩৫ তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। তার পুলিশ আইডি বিপি ৮৮১৭১৯৯৫২৪৭, তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট। তার অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে ২০৪৭ সালে। তার স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে কর্মরত।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৪ সালে ১৬ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দিন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর ১৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশ বাদি হয়ে তাজ হাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এসআই বিভূতিভূষণ রায় বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ২/৩ হাজার ছাত্র জনতাকে। এ মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ জুলাই ছাত্র-জনতা পুলিশের কাজে বাধা দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও ছাত্র জনতার ইটপাটকেলে আঘাত প্রাপ্ত হয় এক ছাত্র। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার নাম আবু সাঈদ।
এ মামলার এজাহারে বলা হয়, ছাত্রদের আঘাতে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৩ জন আহত পুলিশের নাম উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে দুই নম্বরে উল্লেখ করা হয় পরশুরাম জোনের এসি মো. আল ইমরান হোসেনের নাম। পুলিশের করা মামলায় দেখা যায়, আবু সাঈদ হত্যার সময় ঘটনাস্থলে এসি মো. আল ইমরান উপস্থিত ছিলেন।
আবার ৫ আগস্টের পর রংপুরের তাজহাট থানা ও কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার মধ্যে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশের ১৭জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ৫ নম্বর আসামি ছিল এসি মো. আল ইমরান হোসেন।
অপরদিকে ১৯ জুলাই রংপুরের শহরে ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা আম্বিয়া বাদি হয়ে রংপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি করা হয় ২১ পুলিশকে। এ হত্যা মামলাতেও এসি আল ইমরান দুই নম্বর আসামি। আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে চারজন গ্রেফতার রয়েছেন। বাকীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে আল ইমরান হোসেনের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাননি তদন্ত কর্মকর্তা।
তথ্য গোপন করে বিসিএস কর্মকর্তা
অবিবাহিত বলে চাকরি নিয়ে শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আল ইমরান হোসেন। সরকারি তদন্তে তার প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাকে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রীর অভিযোগের পর এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে এক বছরের জন্য একটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার লঘুদণ্ড দেওয়া হয়। বর্তমানে ইমরান হোসেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পরশুরাম জোনের এসি হিসেবে কর্মরত।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. আল ইমরান হোসেন চাকরিতে যোগদানের আগে আরিফা আক্তার গোধূলী নামের এক নারীকে চার লাখ টাকা দেনমোহরে ২০১১ সালের মাঝামাঝি বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে অবস্থিত গেরুয়া গ্রামে বাসা ভাড়া করে বসবাস করেন। ইমরান হোসেন ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীনে বিসিএসসহ প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদের জন্য একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ফরম পূরণের সময় নিজেকে অবিবাহিত বলে তথ্য দেন।
পরে তিনি ৩৫তম বিসিএস (পুলিশ)-এ যোগদান করেন এবং বিসিএস পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় নিজেকে অবিবাহিত উল্লেখ করেন। তিনি চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের সময়ও নিজেকে অবিবাহিত বলে তথ্য দেন। পুলিশ একাডেমি সারদায় ট্রেনিং শেষে বিবাহের অনুষ্ঠান করবেন বলে অভিযোগকারীকে (স্ত্রী) আশ্বাস দেন। এছাড়া পুলিশের বিভিন্ন ডাটাবেজে নিজেকে অবিবাহিত বলে তথ্য দেন। তার শিক্ষানবিশকাল শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে বদলি হলেও সেখানে তথ্য ফরমে নিজেকে অবিবাহিত হিসেবে উল্লেখ করেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ইমরান হোসেন সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষ করে সিলেটে শিক্ষানবিশ হিসেবে বদলি হন। কিন্তু স্ত্রীর কাছে তার অবস্থান কখনো সিলেট বা চট্টগ্রাম বলে মিথ্যা তথ্য দেন।
এএসপি আল ইমরান হোসেনের এমন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অভিযোগকারী (স্ত্রী) রংপুরের পুলিশ কমিশনারকে অবগত করেন। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ের স্বীকৃতি চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। ইমরানের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়। পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত শুনানির দিন ধার্য করা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। পরে তদন্ত কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এরপরই সরকারি কর্মচারী আইন অনুযায়ী আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে এক বছরের জন্য একটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার লঘুদণ্ড প্রদান করা হয়।
আল ইমরান হোসেন ভবিষ্যতে এই মেয়াদের কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না। এছাড়া এই মেয়াদে বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনা করা যাবে না। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার বিবরণে জানা যায়, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত চার আসামি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এরা হলেন- এস আই আমীর হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) তৎকালীন প্রক্টর শরীফুল ইসলাম এবং বেরোবির ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এমরান চৌধুরী আকাশ।
বাকি পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত ২৪ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। একইসঙ্গে আবু সাঈদকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হয়। গত ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
আবু সাঈদ হত্যার পর রংপুরে দুটি হত্যা মামলার আসামি ও পুলিশের করা মামলায় ইমরান হোসেন আবু সাঈদ হত্যার দিন ঘটনাস্থলে থাকার পরও তাকে আসামি না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্ররা।