নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি হোক। মানুষ তার প্রতিনিধি নির্বাচন করুক এবং তার জন্য সংস্কারের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা প্রায় একমত হয়েছি। কিন্তু গোলমালটা শুরু হয়েছে যখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা ঠিক হলো তখন থেকেই। লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের মধ্যে বৈঠকের পর থেকে গোলমালটা শুরু হয়েছে, অর্থাৎ নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু এ দেশের মানুষ বরাবরই লড়াই-সংগ্রাম করে দাবি আদায় করেছে এবং এই নির্বাচনও অবশ্যই এই ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে ছাত্রদল আয়োজিত জুলাই আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এরা (ষড়যন্ত্রকারীরা) ফাঁদ পাতছে যেন আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি, প্রতিবাদ করি, কনফ্রন্টেশন করি। এমন একটা অবস্থা তৈরি করি যেন গণতন্ত্রের উত্তরণটা ব্যাহত হয়। এটাতে আমরা পা দেব না। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে, সহনশীলতার সঙ্গে, শান্তির সঙ্গে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চালু করেছিলেন। কারণ বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যারা সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের পরিবর্তন চায়। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চায়। বাংলাদেশের একটা দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো একটা দেশ হিসেবে দেখতে চায়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের যেন উত্তরণ না ঘটে তার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্নভাবে নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। এমনকি তারেক রহমান সম্পর্কেও অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কেন করা হচ্ছে? তারা ভয় পেয়েছে। কারণ তারেক রহমান জাতীয় নেতা হিসেবে অলরেডি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। সুতরাং তিনি যদি ফিরে আসেন তা হলে তারা যাবে কোথায়? তরুণদের মনে রাখতে হবে আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি। আমাদের শত্রু চতুর্দিকে। আমাদের শত্রু না, গণতন্ত্রের শত্রু। বিএনপির শত্রু না মনে রাখবেন। বিএনপি ইজ ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্র)। বিএনপি ইজ ফ্রিডম (মুক্তি)। বিএনপি হচ্ছে উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে দাবি করে বিএনপির ভাইস-চেয়্যারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশবাসী জানে নির্বাচন হলে কোন মার্কা জিতবে, কোন দল জিতবে, কারা সরকার গঠন করবে। সেজন্য চেষ্টা চলছে কি করে ঠেকানো যায়। এই জায়গায় একটু ধৈর্য নিয়ে আমাদের চলতে হবে। ষড়যন্ত্র হবে, কিন্তু পা দেওয়া যাবে না।
সভাপতির ভাষণে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার আন্দোলন দমন করার জন্য পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছিল। এই দিনে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সরকার ছাত্রদের তথ্য থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিল। তবুও আমরা থেমে যাইনি। হাজারো আহত ছাত্রের চিকিৎসা দিতে সেদিন ড্যাবের সহায়তায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে রাতভর পাশে থেকেছে। শত বাধা সত্ত্বেও ছাত্রদল তাদের সংগ্রাম থামায়নি; বরং রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনের সামনের সারিতে থেকে লড়াই চালিয়ে গেছে।