আবু সাঈদ-ওয়াসিমের কফিনও পুড়িয়ে দেওয়া হয় সেদিন

আবু সাঈদ ও ওয়াসিম আকরামসহ ৬ জন নিহতের ঘটনা ঘটে ১৬ জুলাই। পরদিন (১৭ জুলাই) দুপুর ২টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু, পুলিশ এ জানাজা ও কফিন মিছিল করতে দেয়নি। বরং, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় শিক্ষার্থীদের।
এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেন, বিকেল ৪টায় ঢাবির ভিসি চত্বরে গায়েবানা জানাজা পড়ার। নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। ৪টা ৯ মিনিটে এ জানাজা শুরু হয়। জানাজা শেষে কফিন ধরে শপথ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এই আন্দোলন আমরা বৃথা যেতে দেব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাব না। আজ নতুন দিনের সূর্য উদয় হয়েছে। আমরা আজ ছাত্রলীগকে এই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছি।’

বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটে জানাজা শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা কফিন মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে রওনা হন। ঠিক সে সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের সঙ্গে থাকা কিছু আওয়ামী সমর্থকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় মিছিলে থাকা ৬টি কফিন ভাঙচুর করা হয়। আগুনেও পোড়ানো হয়।
সে সময় ভিসি চত্বরের পাশে পাল্টাপাল্টি ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস। এ দিনে শিক্ষার্থীরা ও বিএনপি, আলাদাভাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জেলায় জেলায় গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল কর্মসূচি পালন করে। দেশের অনেক স্থানের এ কর্মসূচিতে পুলিশ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সমর্থকরা হামলা চালায়। গুলিবর্ষণ করে।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে দুপুর একটার আগে জড়ো হতে থাকে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। কিন্তু, কাউকে জড়ো হতে দিচ্ছিল না পুলিশ। সেদিন বায়তুল মোকাররম থেকে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও পরে বিএনপি ও সরকার পতনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা এ গায়েবানা জানাজা পড়েন। নিহতদের আত্মার মাকফিরাত কামনা করেন।