ভারতের বিএসএফ মানবাধিকার বিরোধী সংগঠন : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্তে গত ২৫ বছরে এক হাজার ২০০ এর বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বিএসএফ একটি সীমান্ত রক্ষী বাহিনী না। বিএসএফকে বলা হয় ‘ট্রিগার হ্যাপি’। একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। খুন করা তাদের নেশা। এই বিএসএফ একটি মানবাধিকার বিরোধী সংগঠন। ভারত সরকারকে বলব, অবিলম্বে বাংলাদেশের মানুষের সাথে মর্যাদার সঙ্গে আচরণ করুন।’
বুধবার (৯ জুলাই) বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দবিতে জুলাই পদযাত্রায় ঝিনাইদহ জেলা শহরের পায়রা চত্বরে আায়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজাসহ অন্যান্যরা।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ঝিনাইদহে প্রবেশ করে। স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় পদযাত্রা। জেলা শহরের অগ্নিবীণা দিয়ে হেঁটে পায়রা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন তারা। হাজারো ছাত্র-জনতা যোগ দেন এ পদযাত্রায়।
সমাবেশে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা স্বৈরাচার থেকে মুক্ত হয়েছি। কিন্তু, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জনবিরোধী শাসন ব্যবস্থা থেকে আমারা মুক্ত হতে পারি নাই। হাসিনার শাসন ব্যবস্থা থাকবে, এই কারণে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান হয় নাই। বিচার, সংস্কার ও সংবিধান সংশোধন করতেই হবে। অন্যথায় গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এই গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে আর যেন ১/১১ ষড়যন্ত্র না হতে পারে, সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই, তবে বিচারসহ সংবিধান সংস্কারের পরে। কারণ নির্বাচিতরা সে কাজটি না-ও করতে পারে।’
প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পায়রা চত্বরে জনসমাবেশ ছিল চোখে পড়ার মতো। ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এনসিপি নেতাদের বক্তব্য শুনেন আগতরা। সাধারণ মানুষের মাঝে জুলাই আগস্ট আন্দোলনের প্রথম কাতারে থাকা বর্তমান এনসিপি নেতাদেরকে দেখার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। স্লোগানে স্লোগানে মুখোরিত হয়ে উঠে সমবেশস্থল। নেতারা হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
সমাবেশে শহীদ সাব্বিরের বাবাসহ ঝিনাইদহের তিন শহীদ পরবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলামের গলা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। এসময় কয়েক মিনিটের জন্য সভাস্থলে নীরবতা নেমে আসে।
চুয়াডাঙ্গার সমাবেশ শেষে এনসিপি নেতারা দর্শনাতে বিএসএফের গুলিতে নিহত এক কৃষকের বাড়িতে যান। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে ঝিনাইদহে পৌঁছেন। স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। সেসময় সড়কের দুই ধারে শত শত মানুষ হাত নাড়িয়ে অভিবাদন জানান এনসিপির নেতাদের।
এর আগে বিকেল ৪টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের স্থানীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন। এনসিপির কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।