পাহাড়ে সেনা অভিযান : কেএনএফের কমান্ডারসহ নিহত ২

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সহযোগী গ্রুপ কুকি চিন আর্মির গোলাগুলি হয়েছে। দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধে কেএনএফ কমান্ডারসহ দুজন অস্ত্রধারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে কেএনএফের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় রুমা সেনাজোনে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর রুমা জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল আলমগীর হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।
লে. কর্নেল আলমগীর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নে পলি প্রাংসা ও মুয়ালপি পাড়ার মাঝামাঝি ১৬ কিলোমিটার দূরে তাইদং ঝিড়ি এলাকায় নাইতং পাহাড়ে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। এ সময় সেনাবাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট আস্তানায় পৌঁছালে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। এ সময় সেনাবাহিনীর সঙ্গে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। বন্দুকযুদ্ধের পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল তল্লাশি করে কেএনএফের পোশাক পরিহিত দুজনের মরদেহ দেখতে পায়। তাদের একজন কেএনএফের কমান্ডার ও অপরজন অস্ত্রধারী সদস্য। তবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ সময় ঘটনাস্থল কেএনএফ আস্তানা থেকে তিনটি এসএমজি, একটি রাইফেল, আটটি ম্যাগজিন, কেএনএফ আর্মির ইউনিফর্ম, বিপুল অস্ত্রের গুলি, আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম, চাঁদার রশিদসহ সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
লে. কর্নেল আলমগীর হোসেন বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর ১৬, ৩৬ ও ৩৭ বীর বেঙ্গল ইউনিটের নিরাপত্তার টিম। এই তিন বেঙ্গল ইউনিটের সাঁড়াশি অভিযানে কেএনএফ কমান্ডারাসহ দুজন নিহত ও তাদের আস্তানা ধ্বংসের পাশাপাশি তাদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। অভিযান শুধু পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। যারা স্থানীয় নাগরিক আছেন তাদের প্রতি সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি রয়েছে। তাদের জানমালের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর।
ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্পের কোনো ক্ষতি হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে এই সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, কেএনএফ অস্ত্রধারীদের যেখানে অবস্থান রয়েছে, সেটি পর্যটন এলাকা থেকে অনেক দূরে। তাই পর্যটন শিল্পে কোনো প্রভাব পড়বে না। পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে যাওয়া ১২৬ বম জনগোষ্ঠীর পরিবার ইতিমধ্যে নিজ গ্রামে ফিরে এসেছে, অন্যদেরও ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ফিরে আসা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা এবং খাদ্য ও বাসস্থানের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।