বান্দরবানে পাহাড় ধস, সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত

লঘুচাপের প্রভাবে বান্দরবানে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড় ধসে লামা-মিরিঞ্জা এলাকায় সড়কে মাটি জমে যাওয়ায় লামা-আলীকদম ও মিরিঞ্জা পর্যটন সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থল তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করে লামা উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আজ বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল তিনটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়।
এদিকে, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি ও সড়ক পরিস্থিতি
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত মঙ্গলবার থেকে জেলার সাতটি উপজেলায় থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার সাতটি উপজেলার চৌত্রিশটি ইউনিয়নে ২২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে টানা ভারি বৃষ্টিতে লামা-আলীকদম, রুমা, থানচি, লামা-সুয়ালক, রোয়াংছড়ি-রুমা, থানচি-আলীকদমসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশ্রমপাড়া এলাকায় একটি পাহাড় ধসে পড়েছে। গভীর রাতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে পাহাড় ধসে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল জানান, বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বৃষ্টি আরও দু-একদিন অব্যাহত থাকবে। তিনি পাহাড়ের পাদদেশে বা ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, লঘুচাপের প্রভাবে জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে জেলার সাতটি উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তাদের নজরদারি বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। কয়েকটি স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে, যা সংস্কারে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।