আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় দাস প্রধান আসামি, ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ‘সনাতনী জাগরণ জোটের’ মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
মামলার এজাহারে মোট ৩১ জনের নাম ছিল। তদন্ত শেষে এদের মধ্যে তিনজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। অপরদিকে তদন্তে নতুনভাবে জড়িত হিসেবে ১০ জনের নাম উঠে আসে, যাদের অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে।
২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর দুপুরে জামিন নামঞ্জুরের পর চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে শুরু হয় উত্তেজনা। এ সময় তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার একপর্যায়ে পুলিশ ‘সাউন্ড গ্রেনেড’ ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই আদালতের সামনে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানেই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর নিহত আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারভুক্ত বেশিরভাগ আসামির বাড়ি চান্দগাঁও মোহরা ও বান্ডেল সেবক কলোনি এলাকায়।
তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় চিন্ময় পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আদালত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্যে উসকানি পেয়ে তার অনুসারীরা আইনজীবীর ওপর হামলা চালায়। জবানবন্দি ও তথ্যপ্রমাণে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।’
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আলিফকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এখন পর্যন্ত ২০ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাদের মধ্যে চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১৮ জন এখনও পলাতক।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পিপি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবেন শিগগিরই।