পরকীয়ার জেরেই অটোরিকশা ছিনতাই, চালক খুন : পিবিআই

পরকীয়ার জেরেই ধামরাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক সায়েদুর রহমান হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুজনকে। এরা হলেন সদর আলী ও আলমগীর।
হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা জেলা পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরকীয়ার জেরেই ঘটেছে অটোরিকশা ছিনতাই ও খুনের ঘটনা। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন আসামিরা।
২০২৩ সালে ২৮ নভেম্বর সকালে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের ফজলে মাহবুবের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ। এই ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই পাভেল মোল্লাকে। তদন্তে শনাক্ত হয় মরদেহের পরিচয়। তার নাম সায়েদুর রহমান। পেশায় অটোরিকশাচালক। পরবর্তী সময়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে ন্যস্ত হয় এবং এসআই আনিসুর রহমান মামলাটির তদন্ত শুরু করেন।
ঢাকা জেলা পিবিআই সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যা ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সদর আলী ওরফে সোহরাবকে (৪৭) গ্রেপ্তার করে আদালতে মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মূল আসামি আলমগীরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা।
সংবাদ সমম্মেলনে পিবিআই জানায়, আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাব, আলমগীর ও জুয়েল একই বাসায় পাশাপাশি রুমে বসবাস করত। আলমগীর ও জুয়েল অবিবাহিত ছিল। পরবর্তী সময়ে সদর আলীর স্ত্রী ও আসামি জুয়েলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং জুয়েল, আলমগীরের সহায়তায় সদর আলীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। এরপর সদর আলী ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কস গড়ার চেষ্টা করে এবং আলমগীরও ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতে চায়। সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সঙ্গে ছয় মাস থাকার পর আবার সদর আলীর কাছে ফিরে আসে।
এরপর নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সদর আলী, আলমগীর ও জুয়েল সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সায়েদুর রহমানকে ফুসলিয়ে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে গিয়ে ফেরার পথে ধামরাই থানাধীন কেষ্টখালি গ্রামের নির্জন স্থানে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে, হাত ও পায়ে রশি বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর তারা সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ভাগাভাগি করে নেয়।
মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্ত শুরু করি। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামি সদর আলী ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করি। তারা আদালতে স্বীকার করেছে টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করেছে।