শিবালয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে

যমুনা নদীর পানি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো তিন সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ রোববার সকালে এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন এবং প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমিসহ নতুন নতুন এলাকা। রাস্তাঘাট ভেঙে ও ডুবে গিয়ে এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ডুবে নিম্নাঞ্চলের বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়েছে অনেক পরিববার। স্থানীয় কৃষকরা ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
শিবালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার (জিআর) রিমন শিকদার জানান, যমুনা নদীর এ পয়েন্টে সপ্তাহখানেক ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত মঙ্গলবার ১৫ সেন্টিমিটার, বুধবার ১৪ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ১৬ সেন্টিমিটার, শুক্রবার ১৪ সেন্টিমিটার এবং শনিবার আরো ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। আজ আরো তিন সেন্টিমিটার বেড়েছে। প্রতি তিন ঘণ্টা পর পর এই পয়েন্টে পানি স্তর পরিমাপ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে নদী তীরবর্তী এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, গত কদিনে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে এর শাখা নদী ইছামতি, কালিগঙ্গা, ধলেশ্বরীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী, বাঁচামারা, বাঘুটিয়া, জিয়নপুর ও খলসী ইউনিয়নের ইসলামপুর, বাসাইল, মুন্সিকান্দি, জোতকাশি, বেপারীপাড়া, ফকিরপাড়া, রাহাতপুর, চুয়াডাঙ্গা, হাজিপাড়া, কাচারীপাড়া, উত্তরখন্ড, অহেল আলীর পাড়া, গোবিন্দপুর, নকের আলী মাদবরপাড়া, বাঘপাড়া, মণ্ডলপাড়া, বড়টিয়া, আমতলী, কাটাখালি ও বৈন্যা এলাকায় কম-বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে।
শাখা নদী তীরবর্তী শ্রীধরনগর, কুস্তা, ঘিওর, মাইলাগি, জাবরা, তরা, বেউথা, নয়াকান্দিসহ প্রভৃতি নতুন নতুন এলাকাও পড়েছে ভাঙনের মুখে। অনেক স্থানে বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়িঘর এরই মধ্যে ডুবে গেছে। ফসলের ক্ষেতও প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার দুর্গতদের জন্য সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সাহায্য আসেনি বলেও জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আলিমুজ্জামান মিয়া জানান, বর্ষার পানি এমনিতেই জমির উর্বরা শক্তি বাড়ায়। এই পানি ফসলি জমিতে আসায় পাটের জন্য ভালো হয়েছে। তবে, এই পানিতে রোরো-আমন ধান এক হাজার হেক্টর, রোপা বীজতলার তিন হেক্টর ও পাঁচ হেক্টর শাকসবজির জমি ডুবে গেছে। এক সপ্তাহের বেশি এসব ফসল পানিতে ডুবে থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।