নির্বাচনের আগেই জুয়েল আরেং এমপি নির্বাচিত!

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া) আসনে উপনির্বাচন ১৮ জুলাই। নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ এই আসন থেকে শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীই নির্বাচন করছেন না, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ওই স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনও করেননি।
এই আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য হয়। পরে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয় প্রমোদ মানকিনের ছেলে জুয়েল আরেং। এখন তাঁকেই ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এমপি’ বলে প্রচার চালানো হচ্ছে।
সদ্য শেষ হওয়া রমজান মাসেই জুয়েল আরেংকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে প্রধান অতিথি করে ‘ইফতার ও দোয়া মাহফিল’-এর আয়োজন করা হয়েছিল তাঁর নির্বাচনী এলাকা হালুয়াঘাটে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপ হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহের ব্যানারে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতও হয়েছিলেন জুয়েল আরেং। আয়োজক সংগঠনটির সভাপতি ছিলেন প্রয়াত প্রমোদ মানকিন। গত ২৭ জুন সোমবার ‘আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপ’-এর নিজস্ব ভবন ‘হোটেল ইমেক্স কমিউনিটি সেন্টারে’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ জন্য সংগঠনের মনোগ্রামখচিত ছাপানো একটি আমন্ত্রণপত্রে জুয়েল আরেংকে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এমপি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমন্ত্রণপত্রে দেখা যায়, এতে স্বাক্ষর করেছেন সংগঠনের মহাসচিব হালুয়াঘাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ আলী আজগর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ খোরশীদ আলম ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে ওই আসনের একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ২০০৯ সালে ধোবাউড়ার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা খাতুন বলেন, জুয়েল আরেংয়ের সমর্থকরা প্রতিনিয়ত নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় তাঁকে প্রকাশ্যে বাধা দিচ্ছে। মাইক ভাঙচুর ও প্রচারকর্মীর মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া, পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া, লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটছে। বাধাদানকারীরা প্রকাশ্যে দাবি করছে যে জুয়েল আরেং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে গেছেন। সে কারণে সেলিমা বেগমের আর নির্বাচন করার দরকার নেই বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গতকাল সোমবার হালুয়াঘাটে গিয়ে সেলিমা খাতুনের কথার সত্যতা এনটিভি অনলাইনের চোখে পড়েছে।
সেলিমা খাতুন বলেন, এ ধরনের প্রচার প্রকাশ্যে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ ধরনের প্রচারণায় প্রভাবিত হওয়াসহ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সংশয় দেখা দিয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে। প্রাণনাশের হুমকির বিষয়ে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে জানতে জুয়েল আরেংকে টেলিফোন করা হলে ফোন ধরেননি তিনি।
ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া) আসনের উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, জুয়েল আরেংকে নির্বাচিত হিসেবে প্রচারের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে এনটিভি অনলাইনের খবর পড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিমা খাতুনের নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।