ময়মনসিংহ সদরে পারিবারিক জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলর শরাফ উদ্দিনের মিষ্টির কারখানা ও দোকানঘরে হামলা ও মালামাল লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গতকাল রোববার সকালের দিকে কোতোয়ালি মডেল থানায় বাদী হয়ে চারজনের নামসহ অজ্ঞাত আরো দশ-বারোজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন সাবেক এই কাউন্সিলর।

এর আগে গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর সেহড়া মুন্সিবাড়ী এলাকায় ‘দি নিউ বিউটি সুইটমিট' নামে শরাফ উদ্দিনের ওই দোকান ও কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাঁরা হলেন মনিরুজ্জামান মনি (মনির হোসেন, ৪৫), হারুন অর রশিদ লিটন (৪৮), রাজু বেগম (৪৫) ও সিফাত ওরফে আদর (২০)।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, সেহড়া মুন্সিবাড়ী এলাকার পারিবারিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল স্থানীয় স্বপন মিয়া ও তাঁর ভাগ্নে মনির হোসেনের মধ্যে। এরই মাঝে জমির অন্যতম দাবিদার স্বপন মিয়া বায়না রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ওই জমি লিখে দেন সাবেক কাউন্সিলর শরাফ উদ্দিনকে। শরাফ সেখানে মিষ্টির কারখানা ও দোকান নির্মাণ করেন।

ওই জমির আরেক দাবিদার মনির হোসেন ও তাঁর ভাই লিটন লোকজন সঙ্গে করে গত শনিবার বিকেলের দিকে শরাফ উদ্দিনের কারখানায় অতর্কিতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সে সময় নগদ টাকাসহ কারখানার মালমাল লুট করে হামলাকারীরা। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়।

শরাফ অভিযোগ করে বলেন, ‘শনিবার বিকেলের দিকে মনির ও তার ভাই লিটন অস্ত্রসহ ৫০-৬০ জন লোক নিয়ে এসে প্রথমে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে মিষ্টি কারখানায় হামলা চালায়। কারখানা ভাঙচুরের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ক্যাশে থাকা নগদ এক লাখ ৩৯ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন শরাফ।

অন্যদিকে মামলার আসামি মনির হোসেন দাবি করেন, তাঁর মায়ের পারিবারিক জমি জাল দলিল তৈরির মাধ্যমে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন মামা স্বপন মিয়া। মায়ের জমি উদ্ধারেই তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর আবদুল মান্নান বলেন, ‘জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে জমি নিয়ে মামলা থাকা অবস্থায় এভাবে মিষ্টির দোকানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো ঠিক হয়নি।’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সিটি কাউন্সিলরও সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেন।