মানিকগঞ্জে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধে পাঁচ দফা দাবি

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে মানিকগঞ্জে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই দাবি না মানলে আগামী ৯ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের আল্টিমেটামও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কাছে মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কাজী এনায়ত হোসেন টিপু ও সদস্য সচিব মো. বাবুল সরকার লিখিতভাবে এই দাবি জানিয়েছেন।
আর এই দাবিগুলোর অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দুটি সংগঠন অফিস ও টার্মিনালে চাঁদাবাজদের দখলমুক্ত, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠন নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
কাজী এনায়েত হোসেন টিপু ও মো. বাবুল সরকার জানান, গত ১৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নাম ভাঙিয়ে তাঁর ভাই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্রাফিল হোসেন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারল সম্পাদক জাহিদ হোসেন বহিরাগত লোকজন নিয়ে তাদের অফিস ও টার্মিনাল দখল করে নেন। এর পর মালিক শ্রমিকদের কাছ থেকে জোড় করে চাঁদা আদায় করে আসছেন তারা। এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানিকগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস ওনার্স গ্রুপ ও মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ যৌথভাবে ১৫ অক্টোবর বাস ধর্মঘটের ডাক দেয়।
পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ওই দিনই সকাল ১০টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় মালিক শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ কারণে যে কোনো মুহূর্তে মানিকগঞ্জে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় মারাত্মক অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। তাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে ওই পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তারা।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদ হোসেন জানান, টিপু ও বাবুল সরকারের কমিটি অবৈধ। তারা দীর্ঘ দিন ধরে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নির্দেশে পরিবহন সেক্টরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে কোনো পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে না। বরং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবহন থেকে টিপু ও বাবুল সরকারের লোকজনের সব ধরনের চাঁদা আদায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক নাজমুছ সাদাত সেলিম জানান, মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে পাঁচ দফা দাবি করা হয়েছে। কোনোভাবেই যেন জনসাধারণ যানবাহনে চলাচলে ভোগান্তির শিকার না হন। এজন্য বিষয়টি নিয়ে মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে সমাধান করা হবে বলেও জানান তিনি।