‘শুধু ভাবছিলাম আমাকে দেখলে মায়ের কী অবস্থা হবে?’

২০ জুলাই। রাজধানীর শাহবাগের মোড়। বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে ওই বিক্ষোভ। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। আর তখনই পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ২৭ জুলাই তাঁকে চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এখনো সিদ্দিকুর চোখে কিছু দেখেন না। তাঁর দুই চোখে আলো ফিরবে কি না, এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ চিকিৎসকরাই।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার ঢাকেরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর আজ শুক্রবার বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর বোঝা যাবে তাঁর চোখের অবস্থা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিদ্দিকুরের সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের প্রতিবেদক জনি রায়হানের।
এনটিভি অনলাইন : কেমন আছেন ভাই?
সিদ্দিকুর রহমান : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, আপনি ভালো আছেন ভাই?
এনটিভি অনলাইন : দেশে ফিরলেন, এখন কোথায় যাবেন? বাসায় নাকি অন্য কোথাও?
সিদ্দিকুর রহমান : না ভাই এখন হাসপাতালে যাব, মানে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।
এনটিভি অনলাইন : আপনাদের দেশে ফিরতে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
সিদ্দিকুর রহমান : না ভাই, আমার বড় ভাই আর মেডিকেল কলেজের এক স্যার ছিলেন আমার সঙ্গে। সবাই ভালোভাবে দেশে ফিরেছি।
এনটিভি অনলাইন : চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ের চিকিৎসকরা কী বললেন?
সিদ্দিকুর রহমান : দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই সামান্য।
এনটিভি অনলাইন : আগামী দিনগুলোর জন্য আপনার পরিকল্পনা কী?
সিদ্দিকুর রহমান : আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তবে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া স্বাভাবিক হোক। জীবন মান স্বাভাবিক হোক এটাই চাওয়া। তবেই আমি সার্থক। সাত কলেজের লেখাপড়া স্বাভাবিক হোক, আর আমি যেন লেখাপড়া শেষ করতে পারি। দেশে যে ব্যবস্থা আছে, তাঁর মাধ্যমে যেন আমি লেখাপড়া শেষ করতে পারি। আর এ জন্য রাষ্ট্রের, প্রশাসনের, সরকারের কাছে সাহায্য চাই।
এনটিভি অনলাইন : সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আপনার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এখন পর্যন্ত এমন কোনো লিখিত চিঠি আপনি বা আপনার পরিবার পেয়েছেন?
সিদ্দিকুর রহমান : না আমি তো আজ মাত্র দেশে আসলাম, আমি এই ব্যাপারে এখনো বিস্তারিত কিছু জানি না।
এনটিভি অনলাইন : বিদেশে থাকার সময় কার কথা বেশি মনে পড়েছে?
সিদ্দিকুর রহমান : মায়ের কথা বেশি মনে পড়ছিল। শুধু ভাবছিলাম মা যখন আমাকে দেখবে তখন তাঁর কী অবস্থা হবে?
এনটিভি অনলাইন : জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কতদিন থাকতে হবে?
সিদ্দিকুর রহমান : এটা স্যাররা (চিকিৎসক) সিদ্ধান্ত নেবেন।
এনটিভি অনলাইন : ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
সিদ্দিকুর রহমান : আপনারাও ভালো থাকবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন।