ফোনের সেই কণ্ঠটি অপরিচিত ছিল : মান্না

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে যে ব্যক্তির কথোপকথন হয়েছিল তাঁকে আমি চিনি না। তাঁর কণ্ঠটি আমার কাছে অপরিচিত ছিল। এর আগে আমি তাঁর সঙ্গে কোনোদিন কথা বলিনি। কথোপকথনটি পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে।’
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে মান্না এ মন্তব্য করেন।
২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো একজনের সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার ফোনালাপ ফাঁস হয়। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ মাহমুদুর রহমান মান্নাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
২১ মাস কারাবাসের পর সম্প্রতি মান্না জামিনে মুক্তি পান। এরপর কিছুদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সেই অজ্ঞাত কণ্ঠের ব্যাপারে জানতে চাইলে মান্না কণ্ঠটিকে চেনেন না বলে দাবি করেন। এ সময় তিনি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার খারাপ হলে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। তাই তিনি আমাকে হাসপাতালে দেখতে যান। ভিন্ন রাজনীতি করলেই ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের দুবার আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।’
মান্না আরো বলেন, ‘অনেকে বিনা বিচারে দেশের জেলখানাগুলোতে বছরের পর বছর কাটাচ্ছেন। এমনও অনেকে আছেন যাঁরা ২০ বছর ধরে বিনা বিচারে কারাগারে আছেন। যারা ক্ষমতায় ছিল বা আছে তারাই দায়ী। এ জন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে এটা চলতে পারে না।’
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘এটা নিছক ফরমালিটি মাত্র। অতীতে এ ধরনের সংলাপ সুখকর কোনো ফল দেয়নি।’ নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের ব্যাপারে আন্তরিকতা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এইচ এম আকরাম বলেন, ‘আহ্বায়ক না থাকায় কাজের কিছুটা ছেদ পড়েছিল। নাগরিক ঐক্য মাঠে ছিল, আছে ও আগামীতে থাকবে।’
মতবিনিময় সভায় নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইসলাম উদ্দিনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশন গঠন ও আগামী নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দলের অবস্থান জানানোর পাশাপাশি এ সময় মান্না কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে। এ ছাড়া নিজে অসুস্থ জানিয়ে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে এ সময় পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, সশস্ত্র বাহিনীকে বিদ্রোহে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গত বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে স্বজনরা জানান, এর আগের দিন থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মান্না মুক্তি পান।