পোর্টল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের, ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারের অনুমোদন

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ড শহরে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, প্রয়োজন হলে “পূর্ণ শক্তি” ব্যবহার করা হবে যাতে অভিবাসন আটক কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে চলা বিক্ষোভ দমন করা যায়।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “আমি যুদ্ধ সংক্রান্ত সচিব পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিচ্ছি পোর্টল্যান্ডে সেনা পাঠাতে। আমাদের আইসিই সুবিধাগুলো অ্যান্টিফা ও অন্যান্য দেশীয় সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে পূর্ণ শক্তি ব্যবহারের অনুমোদনও দিচ্ছি।”
ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক বলেছেন, শহরে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই। “পোর্টল্যান্ডে কোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি নেই। আমাদের কমিউনিটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ। এই মোতায়েন ক্ষমতার অপব্যবহার হবে।”
ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারাও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। সিনেটর রন ওয়াইডেন সতর্ক করে বলেছেন, এটি ২০২০ সালের মতোই পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে যখন ফেডারেল বাহিনী কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদ দমনে নামানো হয়েছিল।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রধান মুখপাত্র শন পারনেল বলেছেন, “প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমরা পোর্টল্যান্ডে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) অভিযানে সহায়তার জন্য সেনা মোতায়েন করতে প্রস্তুত।”
তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেননি, তিনি ন্যাশনাল গার্ড নাকি নিয়মিত সেনা ব্যবহার করবেন। “পূর্ণ শক্তি” ব্যবহারের অর্থ কী— সেটিও অস্পষ্ট।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, পোর্টল্যান্ডে অভিবাসন আটক কেন্দ্রে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে। কিছু বিক্ষোভকারী সহিংসতায় জড়িত হয়েছে। তারা দাবি করেছে, “রোজ সিটি অ্যান্টিফা” নামের সংগঠন আইসিই কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করেছে এবং মৃত্যুর হুমকি দিয়েছে।

ট্রাম্প এর আগেই অ্যান্টিফাকে দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছেন। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গোষ্ঠীকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশীয় সন্ত্রাসী ঘোষণার আইনি কাঠামো নেই। এটি সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
কিছু রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। শ্রমমন্ত্রী লরি শাভেজ-ডি-রেমার বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলার অভাবে পোর্টল্যান্ড অপরাধে ভরা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের আইসিই স্থাপনাগুলো রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ।”
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের ওরেগনে সেনা পাঠানোর আইনি ভিত্তি স্পষ্ট নয়। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফেডারেল বিচারক লস অ্যাঞ্জেলসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন, যা পস কমিটাটাস আইন লঙ্ঘনের শামিল।