ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ভোর আসবেই : মাহমুদ আব্বাস

ট্রাম্প প্রশাসন ভিসা ইস্যু না করায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সশরীরে যোগ দিতে পারেননি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তবে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে তিনি স্বদেশ, নির্বাসন ও প্রবাসে থাকা ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়ে বলেছেন, স্বাধীনতার ভোর আসবেই। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের ক্ষত যত গভীর হোক না কেন এবং এই দুর্ভোগ যত দীর্ঘস্থায়ী হোক না কেন, তা আমাদের বেঁচে থাকার এবং টিকে থাকার ইচ্ছাকে ভাঙতে পারবে না।’
মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘স্বাধীনতার ভোর আসবেই এবং ফিলিস্তিনের পতাকা আমাদের আকাশে মর্যাদা, দৃঢ়তা এবং দখলদারত্বের জোয়াল থেকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে উঁচুতে উড়বে। ফিলিস্তিন আমাদের। জেরুজালেম আমাদের হৃদয়ের রত্ন এবং আমাদের চিরন্তন রাজধানী। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।’
মাহমুদ আব্বাস তার ভাষণে আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের ভূখণ্ড ছেড়ে যাবো না। আমাদের জনগণ জলপাই গাছের মতো শিকড় গেঁড়ে থাকবে। পাথরের মতো অটল থেকে, আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে এসে দেশ পুনর্গঠন করব এবং আমাদের ধন্য ও পবিত্র ভূখণ্ড থেকে আশা, সত্য ও ন্যায়ের বার্তা পাঠাব এবং আমাদের অঞ্চল ও সমগ্র বিশ্বের মানুষের জন্য ন্যায়সঙ্গত শান্তির সেতু নির্মাণ করব।’
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে আরও কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন-
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা: গাজায় অবিলম্বে এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান হওয়া প্রয়োজন।
মানবিক সহায়তা: কোনো শর্ত ছাড়াই ইউএনআরডব্লিউএ-সহ জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করা এবং ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা।
বন্দী বিনিময়: উভয় পক্ষের সব জিম্মি ও বন্দীদের মুক্তি দেওয়া।
দখলদারত্ব ও বসতি স্থাপন: গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ বা স্থানান্তরের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করা, বসতি স্থাপন এবং বসতি স্থাপনকারীদের সন্ত্রাস বন্ধ করা এবং ফিলিস্তিনিদের জমি ও সম্পত্তি দখল বা সংযুক্তির নামে চুরি বন্ধ করা এবং পবিত্র স্থানগুলোর স্থিতাবস্থার ওপর আক্রমণ বন্ধ করা।
গাজা উপত্যকার দায়িত্ব: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কমিটির মাধ্যমে গাজা উপত্যকার পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া উচিত, যা ফিলিস্তিন সরকারের একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী সময়ের জন্য গাজার বিষয়াদি পরিচালনা করবে। এরপর গাজাকে পশ্চিম তীরের সাথে যুক্ত করতে হবে। এই সব কিছু করতে হবে আরব ও আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং আরব ও আন্তর্জাতিক উপস্থিতির মাধ্যমে, যাতে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া যায় এবং জাতিসংঘের ছাতার নিচে ফিলিস্তিনি বাহিনীগুলোকে সহায়তা করা যায়।

পুনর্গঠন ও বাস্তুচ্যুতি: গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের তাদের ভূখণ্ডে রাখা নিশ্চিত করা এবং গাজা ও পশ্চিম তীর উভয় স্থানেই পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
অর্থনৈতিক অবরোধ: ইসরায়েল রাষ্ট্রের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা ফিলিস্তিনিদের করের অর্থ মুক্ত করা এবং ফিলিস্তিনি শহর, গ্রাম ও শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ ও বাধাগুলো তুলে নেওয়া।