মার্কিন এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোয় লাভবান হতে পারে যেসব দেশ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগে ব্যবহৃত এইচ-১বি ভিসার ফি এক লাখ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে এই ফি ছিল দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত। হঠাৎ এই বিপুল বৃদ্ধি মূলত মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বিদেশি কর্মীর বদলে স্থানীয় কর্মী নিয়োগে উৎসাহিত করতেই করা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
তবে এর ফলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো, যারা বিপুলভাবে ভারতীয় ও চীনা কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল। শুধু গত বছরেই ভারতীয়রা মোট ৭১ শতাংশ এবং চীনা নাগরিকরা ১১.৭ শতাংশ এইচ-১বি ভিসা পেয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা এই নতুন নিয়মের “সম্পূর্ণ প্রভাব” খতিয়ে দেখছে। নয়াদিল্লি আশঙ্কা করছে, এই পরিবর্তনে বহু পরিবারে মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে।
কোন খাত বেশি প্রভাবিত?
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে দুই-তৃতীয়াংশ এইচ-১বি চাকরিই প্রযুক্তি-সম্পর্কিত। অ্যামাজন, গুগল, মেটা, মাইক্রোসফট ও অ্যাপলের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল সংখ্যক এই ভিসাধারী কর্মী নিয়োগ দেয়।
প্রযুক্তি দুনিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বে আছেন অনেক প্রাক্তন এইচ-১বি ভিসাধারী – যেমন গুগলের সুন্দর পিচাই, মাইক্রোসফটের সত্য নাদেলা, এমনকি টেসলা ও স্পেসএক্সের ইলন মাস্ক।

কোন কোন দেশ সুযোগ নিতে পারে?
যুক্তরাজ্য : প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য ভিসা ফি বাতিলের প্রস্তাব বিবেচনা করছেন বলে খবর দিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস। বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও ডিজিটাল বিশেষজ্ঞদের আকর্ষণ করাই মূল লক্ষ্য।
চীন : ১ অক্টোবর থেকে বেইজিং চালু করতে যাচ্ছে নতুন কে ভিসা, যা এসটিইএম খাতের বিশেষজ্ঞদের চাকরি বা গবেষণার প্রস্তাব ছাড়াই পড়াশোনা ও কাজের সুযোগ দেবে।
দক্ষিণ কোরিয়া : প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ কাং হুন-সিক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী টানতে চায় সিউল। আগামী বাজেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
কানাডা : সম্প্রতি স্থায়ী বসবাসের আবেদনকারীদের জন্য কম্প্রিহেনসিভ র্যাঙ্কিং সিস্টেমের কাট-অফ স্কোর কমিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি ২০২৩ সালে চালু হওয়া বিশেষ ভিসা কর্মসূচি পুনরায় চালুর বিষয়টিও বিবেচনা করা হতে পারে, যার মাধ্যমে এইচ-১বি ভিসাধারীরা সহজ শর্তে কানাডায় যেতে পারতেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ ফি বাড়ানোর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং স্বল্পমেয়াদে “ব্রেন ড্রেইন” বা মেধাপাচার ঘটতে পারে। দক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকেরা অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য হবেন।