মার্কিন হামলায় আরও একটি ‘মাদক পাচারকারী নৌকা’ ধ্বংস, নিহত ৩

মার্কিন বাহিনী আরও একটি “মাদক পাচারকারী নৌকায়” হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দেওয়া এক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, এটি চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় হামলা যেখানে মাদক পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা হলো।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, এই “প্রাণঘাতী হামলা” তার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ডের দায়িত্বাধীন এলাকায় চালানো হয়, যা দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের ৩১টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে।
তিনি আরও দাবি করেন, “গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করেছে যে নৌকাটি মাদক পরিবহন করছিল এবং এটি একটি পরিচিত পাচারপথ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। হামলায় তিনজন ‘নারকোটেররিস্ট’ নিহত হয়েছে। নৌকাটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল।”
ট্রাম্প আকাশ থেকে তোলা একটি ভিডিওও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যায় একটি নৌকাকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় এবং পরে সেটি আগুনে পুড়ে যায়।
এই মাসের শুরুতে ২ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে ভেনেজুয়েলা থেকে আসা একটি ছোট নৌকায় হামলা চালানো হয়েছে, যা ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়। সেই ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছিল।
৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় হামলার ঘোষণা দেন ট্রাম্প, যেখানে আরও একটি নৌকাজে হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং টার্গেট করা ব্যক্তিদের বিচার ছাড়াই হত্যা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলা সরকার এক মাছ ধরার নৌকাকে আটক করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে “উসকানি” দেওয়ার অভিযোগ করেছে।

এই ধারাবাহিক হামলা ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে সম্পর্ককে আরও সংকটময় করে তুলেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এদিকে, খবর এসেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার ভেতরে মাদক চক্রের বিরুদ্ধে এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। গত সপ্তাহে পাঁচটি বিমান পুয়ের্তো রিকোয় অবতরণ করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে অন্তত সাতটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছে।
মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, “ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলা ও পুরো লাতিন আমেরিকায় সহিংসভাবে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। আমরা শান্তি, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চাই।”