ভেনেজুয়েলা উত্তেজনা : পুয়ের্তো রিকোতে ১০ যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদক চোরাচালানকারী চক্রের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধের অংশ হিসেবে পুয়ের্তো রিকোতে ১০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছেন। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ওয়াশিংটনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির কারণে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তে থাকা উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে একটি মাদক চোরাচালানকারী চক্রের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। ট্রাম্প মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে যুদ্ধ বিমানগুলো পাঠাচ্ছে। এগুলো দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে এর আগে মোতায়েন করা মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোর সঙ্গে যোগ দেবে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি মার্কিন নৌযানের কাছে ভেনেজুয়েলার দুটি সামরিক বিমান উড়ে গিয়েছিল, যা তাদের ভাষায় একটি ‘অত্যন্ত উসকানিমূলক’ পদক্ষেপ।
মঙ্গলবার মার্কিন বাহিনী ক্যারিবিয়ানে একটি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকা উড়িয়ে দেয়। ট্রাম্প দাবি করেন, এটি ভেনেজুয়েলার একটি অপরাধী চক্র 'ট্রেন দে আরাগিয়া'-এর ছিল এবং মাদুরোর সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। এই ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়। কারাকাস এই হামলায় ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন সূত্রগুলো জানিয়েছে, অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানগুলো পুয়ের্তো রিকোর একটি বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন করা হচ্ছে। পুয়ের্তো রিকো একটি মার্কিন ক্যারিবিয়ান দ্বীপাঞ্চল যার জনসংখ্যা ৩০ লাখের বেশি।
ভেনেজুয়েলার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন, তবে ওয়াশিংটন ওই নির্বাচনকে অবৈধ বলে মনে করে। মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির নিন্দা করে প্রেসিডেন্ট মাদুরো এটিকে ‘গত ১০০ বছরে ওই মহাদেশের দেখা সবচেয়ে বড় হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রেসিডেন্ট মাদুরো তার দেশকে ‘জাতীয় ভূখণ্ড সুরক্ষায় সশস্ত্র সংগ্রামের’ জন্য প্রস্তুত ঘোষণা করে দেশটিতে প্রায় তিন লাখ ৪০ হাজার সামরিক সদস্য এবং ৮০ লাখেরও বেশি রিজার্ভ বাহিনীকে একত্রিত করেছেন বলে দাবি করেন। মাদুরো বিদেশি সংবাদদাতাদের বলেন, যদি ভেনেজুয়েলা আক্রান্ত হয়, তবে দেশ অবিলম্বে সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে চলে যাবে।

একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এ সপ্তাহে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বর্তমানে ল্যাটিন আমেরিকায় মাদকবিরোধী অভিযানে মার্কিন নৌবাহিনীর আটটি জাহাজ সংশ্লিষ্ট রয়েছে। এরমধ্যে তিনটি উভচর আক্রমণকারী জাহাজ, দুটি ডেস্ট্রয়ার, একটি ক্রুজার এবং একটি উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ ক্যারিবিয়ানে, এবং একটি ডেস্ট্রয়ার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে রয়েছে।
অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার কাছে ১৯৮০’র দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা ১৫টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ছাড়াও বেশ কিছু রুশ যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টার রয়েছে।