আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন সম্মেলন ইউক্রেনের জন্য ‘ধীর পরাজয়’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আলাস্কায় একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে। এই আলোচনাকে অনেক বিশেষজ্ঞই দেখছেন ইউক্রেনের জন্য এক ধরনের ‘ধীর পরাজয়’ হিসেবে। ট্রাম্পের কিছু কথা থেকে মনে হচ্ছে, এই বৈঠকে ইউক্রেনকে নিজেদের কিছু জমি রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে বলা হতে পারে, যা ইউক্রেনের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। খবর সিএনএনের।
ট্রাম্পের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, এই বৈঠকে পুতিন তার ‘শতাব্দীর সেরা জমির চুক্তি’ করার চেষ্টা করবেন। তিনি ইউক্রেনকে এমন কিছু জমি ছেড়ে দিতে বলবেন যা রাশিয়া এখনও দখল করতে পারেনি।
এমন মন্তব্যের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিজেদের জমি দখলদারদের হাতে তুলে দেবে না। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা সফল হবে না।
ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের প্রাথমিক আলোচনার পর কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ভয় পাচ্ছে, ইউক্রেনকে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ ছেড়ে দিতে হতে পারে।

রাশিয়া বর্তমানে ডোনেটস্কের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর— পোকরোভস্ক ও কোস্টিয়ান্টিনিভস্কে ঘিরে ফেলার খুব কাছে চলে এসেছে। এই কৌশলের মাধ্যমে তারা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের অবরোধের মুখে ফেলার চেষ্টা করছে, যা মস্কোকে আলোচনার টেবিলে সুবিধা দেবে। এই শহরগুলো হাতছাড়া হলে ইউক্রেনের পক্ষে জনশক্তি বাঁচানো কঠিন হবে।
ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে একটি চুক্তি করতে মস্কোর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের ওপর চাপ বাড়ছে।
ইউরোপীয় দেশগুলো ১৯৩৮ সালে হিটলারের সঙ্গে ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেভিল চেম্বেরলেইনের ব্যর্থ আলোচনার মতো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি নিয়ে সতর্ক। কারণ তারা মনে করে, রাশিয়া চুক্তিতে সম্মত হলেও পরে আবার আক্রমণ করার জন্য সেই বিরতি ব্যবহার করতে পারে।
অন্যদিকে, ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো ট্রাম্পের নতুন শুল্কের কারণে পুতিনকে আলোচনার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। তবে, রাশিয়ার মূল লক্ষ্য হলো পুরো ইউক্রেনকে দখল করা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৌশলগত সহযোগিতা আদায় করা।