যুক্তরাজ্যে প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থনে বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৩৬৫

‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের একটি সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করার পর তাদের সমর্থনে বিক্ষোভ করায় লন্ডনে অন্তত ৩৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। গত মাসে ব্রিটিশ সরকার এই গ্রুপটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। খবর আলজাজিরার।
শনিবার (৯ আগস্ট) পার্লামেন্ট স্কয়ারে একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের প্রতি সমর্থন প্রকাশকারী যে কাউকে আমরা গ্রেপ্তার করব।
সন্ত্রাসবাদ আইন ২০০০ অনুযায়ী, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সদস্যপদ গ্রহণ বা তাদের সমর্থন করা এখন একটি ফৌজদারি অপরাধ, যার জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সমালোচকরা বলছেন, এটি বাকস্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার লঙ্ঘন করে। তাদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনের একটি কৌশল।
আল জাজিরার সাংবাদিক সোনিয়া গ্যালেগো পার্লামেন্ট স্কোয়ার থেকে জানান, গ্রেপ্তার বা শাস্তির হুমকি বিক্ষোভকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি’ লেখা একটি টি-শার্ট পরা বা কাগজের টুকরোতে একই কথা লেখা থাকাও গ্রেপ্তারের কারণ হতে পারে।
জুলাই মাসে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যজুড়ে বিক্ষোভে ৩৬৫ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ৩৫০ জনেরও বেশি শিক্ষাবিদ একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তারা এই নিষেধাজ্ঞাকে দমনমূলক বলে নিন্দা জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই চিঠিতে ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ ইলান পাপে ও গোল্ডস্মিথসের অধ্যাপক ইয়াল ওয়েইজম্যানের মতো প্রখ্যাত ব্যক্তিরা স্বাক্ষর করেছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-ও এই গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের এভাবে গ্রেপ্তার করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন।