গাজায় যুদ্ধ বন্ধে চাপের মুখে হোয়াইট হাউস সফরে নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী সপ্তাহে (৭ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানো ও সেখানে প্রায় দুই বছর ধরে আটকে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ওয়াশিংটনের তীব্র কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যেই এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা সোমবার (৩০ জুন) রাতে টাইমস অফ ইসরায়েলকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে এটি নেতানিয়াহুর তৃতীয় ওয়াশিংটন সফর হবে। ইসরায়েল ও ইরান মার্কিন মধ্যস্থতায় ১২ দিনের বিমান যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হওয়ার ঠিক দুই সপ্তাহ পরেই এই সফরের কথা সামনে আসছে, যা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে প্রকাশ্য সামরিক সংঘর্ষের রূপ নিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই সফরের সময় সম্পর্কে কোনো নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয় একজন মার্কিন কর্মকর্তা টাইমস অফ ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে গাজা ও ইরান। ট্রাম্প বিশেষ করে গাজা যুদ্ধের অবসান ও অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দেবেন। সিরিয়া নিয়েও আলোচনা হবে বলে ওই মার্কিন কর্মকর্তা জানান।
ইসরায়েলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার বর্তমানে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ওয়াশিংটনে আছেন। তিনি ফিলিস্তিনি ছিটমহলে ২০ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নেতানিয়াহু নিজেও সোমবার সন্ধ্যায় গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিষয়ে তার শীর্ষ সহযোগী ও মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠক করেছেন। একজন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কার্যালয় টাইমস অফ ইসরায়েলকে জানিয়েছে, আগের রাতের সংঘর্ষের পর গাজা যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে দলটি এখনও কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এই বিষয়ে আরও একটি বৈঠক করবেন।
ট্রাম্প সম্প্রতি যুদ্ধ শেষ করা ও গাজায় আটকে থাকা অবশিষ্ট ৫০ জন জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার জন্য ইসরায়েলের একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। গত শুক্রবার (২৭ জুলাই) তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে জিম্মি-যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
তবে, ইসরায়েল ও হামাস সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনও অনেক দূরে রয়েছে, কারণ উভয় পক্ষ মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় তাদের অবস্থানে অটল। প্রধান বিরোধ হলো হামাসের যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের দাবি, যা ইসরায়েলের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার বিপরীতে। ইসরায়েল চায় এমন একটি চুক্তি যেখানে তারা প্রয়োজনে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার বিকল্প খোলা রাখতে পারবে।

তবে, নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা সম্প্রতি বিবৃতি দিয়েছেন, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ করার জন্য সম্মত হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা এর আগে বলেছিলেন, ‘কাতারই মূল বিষয়। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই একটি অগ্রগতি হবে। এটি হামাসের ওপর নির্ভর করে।’