জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির সম্পূর্ণ ক্ষতিসাধন করতে পারেনি এবং তেহরান ‘কয়েক মাসের মধ্যেই’ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুনরায় শুরু করতে পারে। তার এই মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি বলেছিলেন, তেহরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর সিএনএনের। 

গ্রোসির মন্তব্য পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আর আগে সিএনএনের প্রথম রিপোর্টে ওই মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, গত সপ্তাহে ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদানগুলো ধ্বংস করতে পারেনি। সম্ভবত এটিকে কেবল কয়েকমাস পিছিয়ে দিয়েছে।

যদিও চূড়ান্ত সামরিক ও গোয়েন্দা মূল্যায়ন এখনও আসেনি। তবুও ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, তিনি তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি ধ্বংস’ করে দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় শনিবার (২৮ জুন) সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন উইথ মার্গারেট ব্রেনান’ অনুষ্ঠানে আইএইএর মহাপরিচালক গ্রোসি বলেন, তাদের যে সক্ষমতা ছিল তা সেখানেই আছে। তারা কয়েক মাসের মধ্যে, আমি বলব, কয়েকটি সেন্ট্রিফিউজ ক্যাসকেড ঘুরিয়ে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে, বা তারও কম সময়ে। এটা স্পষ্ট যে গুরুতর ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ক্ষতি নয়।

গ্রোসি জোর দিয়ে বলেছেন, আইএইএকে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য দেশটিতে প্রবেশাধিকার দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগ পর্যন্ত ইরান সংস্থাকে তথ্য দিচ্ছিল, কিন্তু কিছু বিষয়ে তারা স্পষ্ট জবাব দিচ্ছিল না। বিশেষ করে ইরানের কিছু স্থানে ইউরেনিয়াম থাকার লক্ষণ  পাওয়া গেলেও সেগুলোর উৎস সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

এদিকে তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধান থেকে সরে আসার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরানের পার্লামেন্ট জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করার লক্ষ্যে একটি বিল পাস করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিও বলেছেন, দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি নিষিদ্ধকারী ‘পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি’তে (এনপিটি) তার সদস্যপদ পুনর্বিবেচনা করতে পারে।