পাকিস্তান সেনাপ্রধানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক আজ

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরের সঙ্গে আজ বুধবার (১৮ জুন) বৈঠক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং অপ্রত্যাশিত কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধানকে হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই মধ্যাহ্নভোজটি হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট রুমে অনুষ্ঠিত হবে এবং গণমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। খবর ডনের।
ইসলামাবাদ এই বৈঠকটিকে একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখছে। কারণ এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল, যেটিকে ভারতীয় মিডিয়াতে বড় কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এখন মুনিরের হোয়াইট হাউস সফরকে পাকিস্তান একটি পাল্টা সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছে।
এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক বিমান হামলার ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক উত্তেজনা বেড়েছে। মুনির বর্তমানে পাঁচ দিনের একটি সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হওয়ার পর এটি তার প্রথম মার্কিন সফর। গত মাসে তিনি পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই পাঁচ-তারকা পদে উন্নীত হন, যা ১৯৫৯ সালে আয়ুব খানের পর আর কেউ পাননি।
ওয়াশিংটনে অবস্থানকালে তিনি পাকিস্তান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “ভারত যদি সভ্য জাতির মতো আচরণ না করে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি আসবে না।” পাশাপাশি, তিনি ভারতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “পেহেলগাম হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত ছিল না, এটি সীমান্ত লঙ্ঘনের অজুহাত মাত্র।”
ওই অনুষ্ঠানে মুনিরকে গোলাপ ফুল ছিটিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। বিপরীতে, পাকিস্তানের বিরোধী দল পিটিআই সমর্থকরা বাইরে প্রতিবাদ করে তাদের নেতাদের মুক্তির দাবি জানায়।
এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আইএস-কে (ইসলামিক স্টেট খোরাসান) বিরোধী সন্ত্রাসবিরোধী অংশীদারিত্বের জোরদারকরণ। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা মঙ্গলবার বলেন, “আইএস-কের বিরুদ্ধে পাকিস্তান একটি অসাধারণ অংশীদার।”
তিনি জানান, পাকিস্তানের অভিযানে বহু আইএস-কে জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং আফগানিস্তানের কাবুলের অ্যাবি গেট বোমা হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ গ্রেপ্তার হয়েছে। মুনির নিজেই কুরিলাকে ফোন করে এ তথ্য জানান এবং শরিফুল্লাহকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করেন।
জেনারেল কুরিলা আরও জানান, পাকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে আইএস-কের ঘাঁটি ভেঙে দিতে “ডজনখানেক অভিযান” পরিচালনা করেছে এবং এই অংশীদারিত্ব কেন্দ্র ও দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস দমন প্রচেষ্টায় মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
মুনির তার প্রবাসী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। “ব্রেন ড্রেন নয়, এটাকে আমরা ব্রেন গেইন মনে করি,” বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি রাজনৈতিক পক্ষপাত এড়িয়ে চলেন এবং প্রবাসীদের পাকিস্তানের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।