মাস্কের কার্যক্রমে ‘হতাশ’ হয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়ালেন ট্রাম্প

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল কর ও ব্যয় বিল’-কে ‘জঘন্য’ বলে সমালোচনা করে প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর এবার প্রকাশ্যেই একে অপরের সঙ্গে তীব্র বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন। এই বাদানুবাদ দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের মধ্যকার দ্বন্দ্বকে চরমে পৌঁছে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৬ জুন) হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের সঙ্গে বৈঠকের সময় মাস্ককে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘ইলন মাস্কের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক ছিল। সেটা আর থাকবে কি না আমি জানি না। আমি মাস্ককে নিয়ে খুবই হতাশ। আমি তাকে অনেক সাহায্য করেছি। তিনি অন্যদের চেয়ে বিগ বিউটিফুল বিলের ভেতরের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন। এতে তার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। হঠাৎই তার সমস্যা দেখা দিল।’
মাস্ক এই বিলের সমালোচনা করায় ট্রাম্প বিস্মিত হয়েছেন বলেও জানান।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পাল্টা জবাব দিয়ে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘আমি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে যেতেন। ডেমোক্র্যাটরা হাউজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিত। আর সেনেটে রিপাবলিকানদের সূক্ষ্ম ব্যবধান (৫১-৪৯) থাকত। অথচ ট্রাম্প এই ধরনের অকৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছেন।’
ট্রাম্প এবং তার কর ও ব্যয় বিল নিয়ে সমালোচনা করে এক্সে একের পর এক মন্তব্য করছেন মাস্ক।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ও তার দলের অন্যান্য রিপাবলিকানদের জন্য ২৭ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন মাস্ক। সেই সুবাদে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের দারুণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ের পর মাস্কের জন্য আলাদা একটি দফতর তৈরি করেছিলেন, যার নাম ছিল ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)। এর কাজ ছিল প্রশাসনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কাটছাঁট করে অর্থনৈতিক সাশ্রয় করা।
গত মাসে কর ও ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদন করার পর ট্রাম্প এটিকে ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ নাম দেন। সেই বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। মাস্কের দাবি ছিল, তিনি ও তার সহকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনে থেকে এতদিন ব্যয় কমাতে যে কাজ করে এসেছেন, এই বিলের কারণে সবই ব্যর্থ হবে। বিলটি তাকে দেখানোর আগেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে সেটি পাস করানোর জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বলেও সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ করেন মাস্ক।

তবে বিলটির বিরোধিতায় মাস্কের ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলছেন, পর্যায়ক্রমিক কর ও ব্যয় সংক্রান্ত এই বিলের সরাসরি প্রভাব পড়ত মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলার ওপর। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের ফলে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।