পানামা খাল পুনর্দখলের বিষয়ে সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘উদ্বেগজনক’ হুমকি নিয়ে জাতিসংঘে অভিযোগ করেছে পানামা সরকার। একই সঙ্গে তারা খালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হংকংভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের নিরীক্ষা শুরু করেছে। খবর এএফপির।

পানামা সিটি থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে, জাতিসংঘ সনদের একটি ধারার উল্লেখ করা হয়েছে, যা কোনো সদস্য রাষ্ট্রকে অন্য দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের হুমকি থেকে বিরত থাকতে বলে।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের কাছে বিতরণ করা চিঠিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও কোনো বৈঠক আহ্বানের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়নি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার তার উদ্বোধনী বক্তব্যে অভিযোগ করেন, চীন কার্যত পানামা খালের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এটি চীনের হাতে দেইনি, আমরা এটি পানামার কাছে দিয়েছি ও এখন আমরা এটি ফেরত নিতে যাচ্ছি।’

এ বিষয়ে চীনের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, চীন সবসময় পানামার সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে ও খালটিকে একটি স্থায়ী নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

এদিকে, পানামার নিয়ন্ত্রক সংস্থা পানামা পোর্টস কোম্পানির কার্যক্রমের একটি ‘বিশদ নিরীক্ষা’ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। হংকংভিত্তিক হাচিসন পোর্টসের এই প্রতিষ্ঠানটি পানামা খালের দুই প্রান্তে বালবোয়া ও ক্রিস্টোবাল বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো স্পষ্ট করে বলেছেন, খাল পরিচালনার বিষয়ে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, পানামা খাল পানামার ছিল ও তা পানামারই থাকবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে খালের প্রধান ব্যবহারকারী, যার পরেই রয়েছে চীন। ২০০০ সাল থেকে খালটি পানামার রাজস্বে ৩০ বিলিয়ন অর্থাৎ তিন হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অবদান রেখেছে। শুধু গত অর্থবছরেই এই খাল ২৫০ কোটি ডলার আয় করেছে। তবে ট্রাম্পের হুমকি ও পানামার প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেবে, তা এখন দেখার বিষয়।