ইসরায়েলি হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী

দোহায় ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে একটি নৈশভোজে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। খবর আল জাজিরার।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দোহায় হামাস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ইসরায়েলি হামলায় একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও পাঁচ হামাস সদস্য নিহত হন। বৈঠকে গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল।
ট্রাম্প ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, কাতারকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের এই হামলায় তিনি “খুবই অসন্তুষ্ট” এবং এটি চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
আল জাজিরার ওয়াশিংটন প্রতিনিধি কিম্বারলি হালকেট জানিয়েছেন, শুক্রবারের বৈঠকে দোহায় ইসরায়েলি হামলা এবং গাজা যুদ্ধ শেষ করার আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা চলবে।
এর আগে, শেখ মোহাম্মদ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন।
কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ সামরিক ঘাঁটি ওয়াশিংটনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। তবে দোহায় হামলার পর কাতার-আমেরিকা সম্পর্ক জটিল হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন কূটনীতির ভারসাম্য রক্ষা
ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যে সম্পর্ক সামলাতে ট্রাম্প প্রশাসন এখন একপ্রকার ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কাতার হামলার নিন্দায় ভোট দিয়েছে, যা বিরল একটি পদক্ষেপ।
তবে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিতেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এই সপ্তাহান্তে দুই দিনের সফরে ইসরায়েল যাবেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দেবেন, যেখানে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের শুক্রবারের বৈঠকেও দুই-রাষ্ট্র সমাধান পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ফ্রান্স ও সৌদি আরব গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যৌথ পদক্ষেপের জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রুবিও ইসরায়েলে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন “গাজায় হামাস যেন আর কখনো ক্ষমতায় না আসে এবং সব জিম্মিকে মুক্ত করা হয়” – সে বিষয়ে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৭৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।