আপনার হাতের ব্যাগটি মানুষের চামড়ার তৈরি নয়তো?

সিরিয়াল কিলার এড গ্রেইনের কথা মনে আছে? কিংবা অ্যালফ্রেড হিচকক পরিচালিত ‘সাইকো’ ছবির নরমান বেটস? এরা দুজনই মানুষ খুন করে, তাদের চামড়া দিয়ে বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিস বানাত।
সিরিয়াল কিলারদের সেই ভয়ংকর কীর্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সবার হাতে হাতে থাকতে পারে মানুষের চামড়ার তৈরি ব্যাগসহ বিভিন্ন জিনিস।
শুনেই আঁতকে উঠবেন না। ভয়ংকর এই খবরের স্বস্তিদায়ক দিক হলো, কোনো মৃত মানুষের দেহ থেকে এই চামড়া নেওয়া হবে না। বরং পরীক্ষাগারে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হবে এ চামড়া। আর তা দিয়ে তৈরি হবে বিভিন্ন প্রসাধনী।
সাড়া ফেলে দেওয়া এই উদ্যোগ নিয়েছেন টিনা গরজাঙ্ক নামের এক ফ্যাশন ডিজাইনার। চলতি বছরে অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল সেন্ট মার্টিন্স ডিগ্রি শোতে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেন তিনি।
সেখানে ওই ফ্যাশন ডিজাইনার জানান, আরেক বিখ্যাত ডিজাইনার আলেকজান্ডার ম্যাককুইনের চামড়া থেকেই তৈরি করা হবে ব্যাগ ও বিভিন্ন প্রসাধনী। ম্যাককুইন ২০১০ সালে মারা যান। ম্যাককুইনের চামড়ার কোষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে তৈরি করা হবে অবিকল তাঁরই চামড়া। এ আবিষ্কারের জন্য প্যাটেন্টও নিয়েছেন টিনা।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতামত, টিনার এই উদ্যোগ তাত্ত্বিকভাবে হয়তো সম্ভব। তবে প্রচুর পরিমাণে এর উৎপাদন আসলেই কষ্টসাধ্য হবে। মানুষের চামড়া থেকে প্রসাধনী তৈরির পেছনে আদর্শটা কী, এমন প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
অনেকেই আবার সরাসরি এটিকে অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন। গার্ডিয়ানের খবরে সাংবাদিক জনাথন জোনস লেখেন, মানবদেহ একটি রক্তমাংসের যন্ত্র। তাই এটির ওপরে শিল্পীদের আকর্ষণ থাকতে পারেই। মানুষের শরীরের ওপরে শিল্পকর্ম করা যেতে পারে। তবে শরীরের কোনো অংশ নিয়ে তা করা যেতে পারে না। সেটা আসল হোক কিংবা পরীক্ষাগারে তৈরি। এটা ফ্যাশন জগতের সঙ্গে একপ্রকারের মশকরা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে শিল্পের নামে খ্যাতিমানদের শরীরের অংশ তৈরির ঘটনা কিন্তু এই প্রথম নয়। এর আগে ইতালির শিল্পী দাইমুত স্ট্রেব পরীক্ষাগারে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ‘ভ্যান গগের কান’ তৈরি করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ভ্যাগ গগের বংশধরদের শরীর থেকে নেওয়া ডিএনএ ব্যবহার করেন।