মহিলা কলেজে পুরুষ ভর্তি, তিন বছর পর বোধোদয়!
তিন বছর ধরে একটি মহিলা কলেজে লেখাপড়া করেছেন দুজন পুরুষ শিক্ষার্থী। আর এই পুরো সময়ে কেউ ধরতেই পারেননি যে কোথাও মস্ত একটি ভুল হয়ে গেছে! অদ্ভুত এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তবে এখন যখন বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই শিক্ষার্থীর পিএইচডির কাজ অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে সিন্ডিকেটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১২ ও ২০১৩ সালে পোস্ট ডক্টরেট বা পিএইচডি ডিগ্রির জন্য বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন দুজন পুরুষ। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই দুজনকে তাঁদের অধিভুক্ত মহারানী’স কলেজ ফর উইমেনের শ্রীমতি ভিএইচডি সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব হোম সায়েন্স থেকে পিএইচডি করার অনুমতি দেয়।
অনুমতি পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রকল্পের জন্য কাজ করতে শুরু করেন।
প্রতিষ্ঠানটির একটি সূত্র জানায়, এ বছর আরো একজন পুরুষ কলেজটিতে পিএইচডি করার অনুমতি চাইলে ঝামেলাটি শুরু হয়। এর আগে পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল। ভর্তি হতে চাওয়া এই শিক্ষার্থীকে অনুমতি না দেওয়ার পরই জানা যায় যে আরো দুজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইতিমধ্যেই পিএইচডি করছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শেষ ডক্টরাল মিটিংয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রশ্ন তোলেন যে, একটি মহিলা কলেজে কীভাবে দুজন পুরুষ পিএইচডি করার অনুমতি পেলেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ দুই পুরুষ শিক্ষার্থীর পিএইচডির কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছে। তাঁদের বক্তব্য, যেহেতু ওই দুই শিক্ষার্থী তাঁদের ডিগ্রির জন্য সব কাজ গুছিয়ে ফেলেছেন এবং যথাযথ সময়ে সব প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, তাই তাঁদের গবেষণাকর্ম জমা নিতে যেন কলেজকে অনুমতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এম রামাচন্দ্র স্বামী বলেন, ‘বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে দুজন পুরুষ শিক্ষার্থীকে এখানে পিএইচডি করার অনুমতি দিল তা আমি বুঝতে পারছি না। সেজন্যই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি।’
পিএচডি শিক্ষার্থীদের একজন সি এস শিবকুমার জানান, তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই এগিয়েছেন। এমনকি কোর্স ওয়ার্কের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে সনদও দিয়েছে। রক্তের রোগ ডিসলিপিডিমিয়ার ওপর আখরোট খাওয়ার প্রভাব নিয়ে তিনি যে গবেষণা করছেন তা ভারতে প্রথম। তাই এর পেছনে যথেষ্ট সময় ও অর্থ খরচ করেছেন তিনি। গবেষণা কর্মও প্রায় শেষের পথে। এ অবস্থায় যদি তাকে পিএইচডি শেষ করার অনুমতি দেওয়া না হয় তাহলে তিনি এমন একটি কাজের শাস্তি পাবেন যেখানে তার কোনো দোষ নেই।
এই দুই শিক্ষার্থী পিএইচডি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাবেন কি না, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের ওপর। জানুয়ারি মাসে সিন্ডিকেটের বৈঠকের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

অনলাইন ডেস্ক