ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন নির্ভয়ার ধর্ষকদের কনিষ্ঠজন

ভারতের দিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন একজন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরকে (ঘটনার সময়ের বয়স অনুযায়ী) আগামীকাল রোববার সংশোধনাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ভারতের হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, সে সময়কার কিশোরকে তিন বছরের বেশি সময় সংশোধনাগারে রাখা যাবে না।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামীর করা এক আবেদন খারিজ করে দিয়ে গতকাল শুক্রবার আদালত বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। তবে আইন অনুযায়ী তিন বছরের বেশি কোনো ব্যক্তিকে সংশোধনাগারে রাখা যায় না। আর ২০ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তির তিন বছর পূর্ণ হচ্ছে।’
ছাড়া পেতে যাওয়া ওই তরুণের বর্তমান বয়স ২১ বছর। সংশোধনাগারের বিচারকরা গত তিন বছর তাঁকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সব শেষে তাঁরা ওই তরুণকে সামাজিকভাবে মূলধারায় ফেরানোর জন্য পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুক্তির পর তিনি চাইলে পরিবারে ফিরতে পারেন।
অবশ্য এই মুক্তি ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রোববার পর্যন্ত সময় আছে। তাই দিল্লি সরকার এবং রাজ্যের নারী কমিশন বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে শুরু করেছে।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২৩ বছর বয়সী মেডিকেল শিক্ষার্থী জ্যোতি সিং ও তাঁর ছেলে বন্ধু সিনেমা হল থেকে ফিরে একটি বাসে ওঠেন। সে সময় ওই ছেলেবন্ধুকে মারধর করে জ্যোতিকে ধর্ষণ করে ছয়জন পুরুষ। এর মধ্যে এক আসামির বয়স ছিল ১৮ বছরের চেয়ে কয়েক মাস কম।
ধর্ষণ শেষে জ্যোতি ও তার বন্ধুকে চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ফুঁসে ওঠে গোটা ভারত। বিচার প্রক্রিয়া শেষে চারজন দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে কারাগারেই মারা যান এক আসামি।
ছয়জন অভিযুক্তর মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ কিশোরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বা বড় সাজা না দিয়ে শুধু বয়স বিচেনায় সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। বলা হয় যে, কিশোর অপরাধীদের প্রতি ভারতের আইন অনেক বেশি দয়ালু হওয়ায় খুন-ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধেও তারা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে।
তিন বছর ধরে জ্যোতির মা আশা দেবী এবং বাবা বদ্রিনাথ ওই তরুণের মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আশা দেবী বলেন, ‘আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। অপরাধ করার পরও একজন অপরাধী ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। ’