শর্মিলার প্রতিবাদী অনশন পেরোল ১৫ বছর

২০০০ সালের ২ নভেম্বর। মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের মালম গ্রামের একটি বাসস্ট্যান্ডে আসাম রাইফেলসের সদস্যদের গুলিতে একজন জাতীয় পুরস্কার বিজয়ীসহ ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ওই ঘটনায় ভারতজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দাবি ওঠে, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার বিধানসংবলিত সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা অধ্যাদেশ (এএফএসপিএ-১৯৫৮) বাতিলের।
ওই দাবিদারদের একজন মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক ও কবি ইরম শর্মিলা। গুলিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার চতুর্থ দিনেই (৫ নভেম্বর) তিনি শুরু করেন অনশন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর এ অনশন পেরোল ১৫ বছর।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইরমের অনশনের ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পশ্চিম ইম্ফলের ফায়েং এলাকায় কবিদের একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। একই দিন এএফসিপিএ বাতিলের দাবিতে নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ করেন ছাত্ররা।
মানবাধিকারকর্মী ও জাস্ট পিস ফাউন্ডেশনের (জেপিএফ) তত্ত্বাবধায়ক অনিল ক্ষেত্রিমায়েম জানান, এএফএসপিএর বিরুদ্ধে শর্মিলার অনশনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মানবাধিকারকর্মীরা বিক্ষোভের আয়োজন করে।
অনিল বলেন, সারা বিশ্বের নাগরিক সংগঠন শর্মিলার এ লড়াইয়ের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে এবং এএফএসপিএ বাতিলের জন্য কেন্দ্রকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, শর্মিলার অনশনের ১৬ বছর শুরু উপলক্ষে কয়েকটি নারী ও নাগরিক সংগঠন আজ শুক্রবার মোমবাতি প্রজ্বালন করবে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আপসহীন শর্মিলার বাড়ি পূর্ব ইম্ফলে। সেখানে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (জেএনআইএমএস) সিকিউরিটি ওয়ার্ডে তাঁকে জোর করে নাকে নল দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।
আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ শর্মিলাকে বেশ কয়েকবার আটক করেছে। কিন্তু তিনি বারবার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, জীবন শেষ করার কোনো ইচ্ছে তাঁর নেই। তাঁর এ অনশন এএফএসপিএর বিরুদ্ধে।