‘বিজেপির ব্যর্থতা থেকে চোখ সরাতেই গরু নিয়ে হানাহানি’

ভারতজুড়ে যখন গরুর মাংস খাওয়ার মতো ‘তুচ্ছ ঘটনা’ নিয়ে খুনের মতো ঘটনা ঘটছে তখন মার্কসবাদী ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির বক্তব্য, বিজেপির ব্যর্থতা থেকে চোখ সরাতেই গরু নিয়ে সারা দেশে এত হানাহানি। রাজনৈতিক দলটির মূখপত্র ‘পিপলস ডেইলি’-এর এক সম্পাদকীয়তে এই কথা বলা হয়।
পিপলস ডেইলি ম্যাগাজিনের সম্পাদকীয়তে গরু জবাইয়ের আর্থসামাজিক দিক নিয়ে আলোচনা করে গরুর মাংস খাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। এতে ২০১২ সালের গরুশুমারির তথ্য তুলে দেখানো হয়েছে, প্রতিবছর ভারতে ৫৩ লাখ গরু কোনো না কোনোভাবে অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়ে। সরকারের পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্তে সেই ৫৩ লাখ গরুকে ভরণপোষণ করতে হবে গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোর। এসব গরুর পেছনে বার্ষিক ২০ হাজার কোটি রুপি ব্যয় হবে যার ফলে ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের জাতীয় দুগ্ধ গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা টি কে দত্তের বরাত দিয়ে পিপলস ডেইলি লিখে, মোট গরুর এক-চতুর্থাংশ বয়োবৃদ্ধ ও অনুৎপাদনশীল; লাখখানেক বলদও তাই। এ ছাড়া গরুশুমারীর তথ্যমতে আরো জানানো হয়, ভারতে ৫৩ লাখ মালিকবিহীন গরু, ষাঁড় ও মহিষ রয়েছে। অর্থনীতির চোখে ‘বোঝা’ বলে চিহ্নিত এই পশুগুলো পালন করা হবে কেবল রাজনৈতিকভাবে দৃষ্টি অন্যদিকে রাখতে। কারণ বড় বড় ব্যর্থতা ঢাকতে তুচ্ছ কারণকেই বড় করে দেখানো হয়।
পিপলস ডেইলির সম্পাদকীয়তে মার্কসবাদীদের বক্তব্য, গরু জবাইয়ের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার চালানো দরকার।
সম্পাদকীয়তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধান আশিষ মিত্রের বক্তব্যও তুলে ধরা হয়। কয়েক মাস আগে দিল্লিতে এক সেমিনারে প্রধান আশিষ মিত্র বাংলাদেশে গরু রপ্তানি বৈধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। আশিষ মিত্র বলেছিলেন, গরু রপ্তানি উন্মুক্ত করে দিলে সীমান্তরক্ষীরা অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে এবং অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের মতো বড় অপরাধ দমনে মনযোগ দিতে পারবে।
তবে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং কেবল রাজনৈতিক কারণে বিএসএফ প্রধানের কথা অগ্রাহ্য করে গরু রপ্তানি বন্ধে আদেশ দেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে।