অক্টোপাস ভিনগ্রহের প্রাণী!

আদৌ এলিয়েন (ভিনগ্রহের প্রাণী) বলে কিছু আছে কি না, থাকলে তারা দেখতে কেমন, কেমন তাদের বুদ্ধিমত্তা-এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কল্পনার এই ভিনগ্রহী প্রাণী কি বাস্তবেও আছে-সেই কৌতূহলের অবসান ঘটাতে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংসও মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যেই কেউ যদি বলেন, এই পৃথিবীতেই অবাধে বিচরণ করছে এলিয়েনরা। তাহলে চমকে ওঠাটাই স্বাভাবিক। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এমনটাই দাবি করেছেন। তাঁরা বলেছেন, জলজ প্রাণী অক্টোপাস এলিয়েন হলেও হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা অক্টোপাসের জেনেটিক কোডের একটি নতুন নকশা খুঁজে পেয়েছেন, যা অদ্ভুত ধরনের। এই নকশা দেখেই তাঁরা ধারণা করছেন, শুড়ওয়ালা শামুক প্রজাতির এই প্রাণীটি এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী হতে পারে।
জীববিজ্ঞানীরা অক্টোপাসের ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন, তাদের জিনোমে ৩৩ হাজার প্রোটিন কোডিং রয়েছে, যা মানুষের চেয়েও বেশি।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ক্লিফটন রাগসডেল বলেন, অন্য যেকোনো প্রাণী এমনকি শম্ভুক গোত্রীয় প্রাণীর থেকে অক্টোপাস একদমই আলাদা। কোনো কিছু আঁকড়ে ধরার জন্য এর আটটা বাহু আছে, চিন্তা করার জন্য আছে বড় মস্তিষ্ক। শুধু তাই নয়, কোনো সমস্যা সমাধানেও অদ্ভুত রকম দক্ষতা রয়েছে অক্টোপাসের।
রাগসডেল বলেন, ‘প্রয়াত ব্রিটিশ প্রাণীবিদ মার্টিন ওয়েলসও দাবি করেছিলেন, অক্টোপাস হলো এলিয়েন। তারপর আমাদের গবষেণাপত্রেও একটি এলিয়েনের প্রথম ক্রম জিনোমের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।’
ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, অক্টোপাসের জিনগত অদ্ভুত ধরনের বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে। জটিল স্নায়ুতন্ত্রের মতো বিবর্তনমূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মাধ্যমে ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে। চারপাশে থাকা যেকোনো কিছুর মতো আকার ও রং ধারণ করতে পারে। যাকে বলা হয়, ইনস্ট্যান্ট কেমোফ্লেজ।
দেহের ১২টি অংশের নমুনা পরীক্ষা করে অক্টোপাসের কয়েক শ জিনের সন্ধান পাওয়া গেছে তা অন্য কোনো প্রাণীতে নেই। এই জিনগুলোর মধ্যে অনেকগুলো মস্তিষ্ক, ত্বক ও শুঁড়গুলোতে কাজ করে।
বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, ক্যালিফোর্নিয়া টু-স্পট অক্টোপাসের জিনোমে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন বেস পেয়ার রয়েছে, পুনরাবৃত্তি ক্রমের (সিকোয়েন্সেস) দীর্ঘ প্রসারণের সঙ্গে ডিএনএর রাসায়নিক ইউনিট রয়েছে। যদিও অক্টোপাসের জিনোম মানুষের জিনোমের চেয়ে সামান্য ছোট। কিন্তু এটি অনেকগুলো জিনে ভর্তি।