ইরানে হামলা নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্ররা

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন সামরিক হামলা নিয়ে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, আবার কেউ কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। খবর সিএনএনের।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেওয়া যাবে না।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ছিল নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক এবং তা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রস্থলেই পরিচালিত হয়েছে। আমরা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চাই না, বরং উত্তেজনা হ্রাস চাই।”
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। ইরানকে আবার আলোচনার টেবিলে ফিরতে হবে।”
পরবর্তীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেন, “যুক্তরাজ্য এই হামলায় অংশ নেয়নি। আমরা ইরানকে সংযম দেখাতে এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথে আসার আহ্বান জানাই।”
ফ্রান্স
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনাটি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। ফ্রান্স বহুবার ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বিরোধিতা করেছে।”
জাপান
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব উত্তেজনা প্রশমিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি। তবে একই সঙ্গে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ ঠেকাতেই হবে।”
সৌদি আরব
সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “ইরানের পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সৌদি আরব।” বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়, “এই সংকট নিরসনে কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করতে, যেন মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায়।”
কাতার
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলে, “এই অঞ্চলে যে বিপজ্জনক উত্তেজনা চলছে, তা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।” কাতার সকল পক্ষকে “বিবেক-বিবেচনা ও আত্মসংযমের” আহ্বান জানায়।
কুয়েত
কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানিয়ে বলে, “বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের দায়িত্ব পালনের সময় এসেছে।” তারা “যেকোনো ধরনের সামরিক তৎপরতা ও উত্তেজনা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ এবং আত্মসংযম প্রদর্শনের” আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, শনিবার ইরানের ফোর্ডো, ইসফাহানসহ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) ট্রুথ স্যোশাল প্লাটফর্মে এক পোস্টে এ তথ্য জানান।
ট্রাম্প ট্রুথ স্যোশালের পোস্টে লেখেন, ‘আমরা ফোর্ডো, নাতানজ ও ইসফাহানসহ ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আমাদের অত্যন্ত সফল হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে রয়েছে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘প্রাথমিক লক্ষ্যস্থলে বোমার পূর্ণ পেলোড ফেলা হয়েছে, ফোর্ডোর জন্য সব বিমান প্রস্তুত। এটি আমাদের মহান আমেরিকানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।’