এ কেমন শিশু, সুই ফোটালেই কান্না থামে!

ছোট্ট এলিজাবেথ। আর দশটি শিশুর মতো একগাল হাসি নিয়ে ঘুম ভাঙে না তার। বরং অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে। আর এ থেকে পরিত্রাণের একটিই মাত্র পথ। তা হচ্ছে সারা শরীরে সুই ফোটানো।
সকাল থেকে তিন মাসের নাতির কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দাদি কেভিন ফেড্রিকি। হেডল্যাম্প পরে শুরু করেন এলিজাবেথের শরীরে সুই ফোটানো। এই কাজ চলে টানা চার-পাঁচ ঘণ্টা। এরপর মোটামুটি সাত ঘণ্টা সুস্থ থাকে সে। এরপর যন্ত্রণায় আবার কান্না শুরু। শুরু হয় আবার সুই ফোটানো।
ছোট্ট এলিজাবেথ আসলে আক্রান্ত জটিল এক চর্মরোগে। রোগটির নাম ‘বাটারফ্লাই ডিজিজ’। এতে সারা শরীরে ফোস্কা পড়ে। আর আস্তে আস্তে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া ত্বকের ওপর ক্ষতও সৃষ্টি হয়। এতে শরীরে ব্যথা হয়। সুই দিয়ে ফোস্কা ফাটিয়ে দিলে ব্যথার উপশম হয়। ফোস্কা বৃদ্ধি পেয়ে তা জীবনঘাতী হতে পারে। এ ছাড়া রোগটির আর কোনো ওষুধ নেই।
২০১৬ সালের মার্চে হিথার ও কেলভিনের ঘর আলো করে জন্ম নেয় এলিজাবেথ। জন্মের পর তার শরীরে অন্য সব ঠিক থাকলেও, পায়ের পাতায় কোনো চামড়া ছিল না। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, শিশুটি ‘বাটারফ্লাই ডিজিজে’ আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্তদের ত্বক প্রজাপতির পাখার মতো সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।
শিশুটির মা হিথার জানান, তাঁরা চান এলিজাবেথ তাড়াতাড়ি বড় হয়ে উঠুক। সে তার আঙুল চুষতে পারে না। গায়ে আঁচড় দিতে পারে না। তিন মাসের একটি শিশু হামাগুড়ি দিতে চায়। কিন্তু এলিজাবেথ তা করতে গেলে তার ক্ষত আরো বেড়ে যায়।
প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে ২০০ শিশু ‘বাটারফ্লাই ডিজিজে’ আক্রান্ত হয়। বিভিন্নজনের মধ্যে এই রোগ বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। আক্রান্ত অনেকেই শিশু অবস্থায় মারা যায়। তবে অনেককেই ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকতে দেখা গেছে।