লকডাউনের যন্ত্রণা সত্ত্বেও চীনের বয়স্করা ভ্যাকসিন নিতে চাচ্ছেন না

চীন কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের জেরে টিকাদান কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে, যা ভবিষ্যতে নভেল করোনাভাইরাসের গুরুতর সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে দেশটির প্রবীণেরা ব্যতিক্রম। খবর দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের।
সাংহাইয়ের কথাই ধরা যাক। সেখানে দুই মাসের লকডাউন শেষে টিকা ক্লিনিকগুলো পুনরায় চালু করা হয়েছে। শত শত মৃত্যু সত্ত্বেও, সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ৬০ বা তার বেশি বয়সি লোকের সংখ্যা জুনের মাঝামাঝি সময়ে মাত্র এক শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৬৩ শতাংশ হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে তারা ৭০ শতাংশকে অন্তত একটি প্রথম ডোজ দিতে পেরেছেন। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে অসংখ্য বয়স্ক মানুষ নিশ্চল রয়েছে। তাদের মধ্যে ৬২ বছর বয়সি রং একজন। তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাঁর ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান তেমন নেই।
স্থানীয় সরকারি সংস্থা কোভিড-১৯ রোধ করে টিকা নিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে। কিন্তু রং তাঁর অবস্থান থেকে সরে যাননি। গোপনীয়তার সুরক্ষায় তিনি ব্যক্তিগত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ধক্য ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক চেন শি বলেছেন, ‘এটি তাদের অর্থনীতি পুনরায় সচল করা থেকে বিরত রাখবে। কারণ তারা সর্বদা চিন্তা করবে যে, এ গ্রুপটি সঠিকভাবে সুরক্ষিত নয়।’
বিশ্বের মধ্যে চীনে টিকাদানে নেতৃস্থানীয়। ১৪০ কোটি জনসখ্যার ৯০ শতাংশ সম্পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছে। অর্ধেকের বেশি বুস্টার পেয়েছে। এমনকি ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যেও এ হার ৮০ শতাংশের বেশি। কিন্তু, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপ ৮০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে গত মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে সরকার পরিসংখ্যান হালনাগাদ করেনি।
বয়স্ক ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ততা সামগ্রিক টিকা দেওয়ার হারকে স্থবিরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ২৭ জুন পর্যন্ত চীনের মোট জনসংখ্যার ৮৯ দশমিক ৪১ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। এক সপ্তাহ আগে এর সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মার্চের ৮৭ দশমিক ৮৫ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি হয়েছে।
৬০ বছর বা এর বেশি বয়সিদের সংখ্যা ৮৩ শতাংশের বেশি। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য হলো—গোটা দেশ আগে যা দেখেছে, যেকোনো মূল্যে সেই গণমৃত্যু কমানো। বিশেষ করে বয়স্কদের টিকা দেওয়ার জন্য আরও সময় দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা।
কিন্তু, সাম্প্রতিক অগ্রগতির অভাবে প্রশ্ন উঠেছে কখন, কীভাবে চীন কোভিড-জিরো কৌশল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।