‘মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে’ আফগানিস্তান, বলছে জাতিসংঘ

আফগানিস্তানের প্রায় সবটা পুনর্দখল করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। নতুন করে তাদের উত্থানে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে দেশটির হাজারও মানুষ। এসব মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটিতে শিগগিরই ‘মানবিক বিপর্যয়’ নেমে আসছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনসিএইচআর-এর মুখপাত্র সাবিয়া মান্তু জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে গত মে মাস থেকে আড়াই লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু।
এর আগে, এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাম্পসন ফিয়েরি বলেছেন, ‘আমরা (আফগান) পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটা এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ অচিরেই ক্ষুধাপীড়িত হওয়ার আশঙ্কা করছি… পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে, তাতে সামগ্রিকভাবে মানবিক বিপর্যয়েরই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আর, এটা খুব দ্রুতই হতে যাচ্ছে।’

জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের মুখপাত্র জেনস লার্কে বলেন, তালেবানের হামলার মুখে হাজারও মানুষ পল্লি এলাকাগুলো থেকে পালিয়ে রাজধানী কাবুলে চলে যাচ্ছেন আশ্রয়ের খোঁজে।
জেনস লার্কে আরও বলেন, এসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে, পার্কে, জনসমাগম এলাকায় ঘুমাচ্ছে। তাদের জন্য আশ্রয় খুঁজে বের করাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।
এদিকে, পালাতে থাকা আফগানদের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। রাজধানী কাবুলের উপকণ্ঠে অস্থায়ী শিবির স্থাপন করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হওয়া অনেকেই রাজধানী কাবুলকে নিরাপদ আশ্রয় মনে করে সেখানে উপস্থিত হচ্ছেন।
অন্যদিকে, গত দুই-তিন মাসে আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে আতঙ্কগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, দিন দিন এই সংখ্যা বাড়ছে।
কয়েক দিনের মধ্যে একের পর এক আফগানিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানীগুলোসহ গুরুত্বপূর্ণ সব শহর দখলে নিয়ে রাজধানী কাবুলের দ্বারপ্রান্তে এসে পড়েছে সশস্ত্র তালেবান গোষ্ঠী। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো আফগানিস্তান থেকে তাদের দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে। যদিও জাতিসংঘ বলেছে, তাদের ৩২০ জন কর্মী দেশটিতেই থাকবে।