এশিয়া কাপ
রুদ্ধশ্বাস জয়ে সুপার ফোর শুরু বাংলাদেশের

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হাতে ৬ উইকেট। বাংলাদেশ অনায়াসে জিতবে, এমনটিই হয়তো ভাবছিলেন অনেকে। কিন্তু, দলটি বাংলাদেশ। সহজ ম্যাচ কঠিন করে তোলাই যাদের কাজ। দাসুন শানাকার করা শেষ ওভারে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অঘটন অবশ্য ঘটেনি। এক বল বাকি থাকতে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। তাতে, এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ঝলমলে সন্ধ্যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধারা জিতেছে ৪ উইকেটে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৮ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৯.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান তোলে বাংলাদেশ।
রান তাড়ায় শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনফর্ম তানজিদ হাসান তামিমকে সাজঘরের পথ দেখান নুয়ান থুসারা। ২ বলে খেলে রানের খাতা খোলার আগে বোল্ড হন তিনি। আরেক ওপেনার সাইফ হাসান এদিন খেলেন দায়িত্ব নিয়ে। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক লিটন দাসের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটি গড়েন। ১৬ বলে তিনটি চারে ২৩ রান করে লিটন বিদায় নেন হাসারাঙার শিকার হয়ে। লিটনের ক্যাচ নেন পাথুম নিশাঙ্কা। সাইফ তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। হাসারাঙার বলে দুনিথ ভেল্লালাগের তালুবন্দি হওয়ার আগে খেলেন ৪৫ বলে ৬১ রানের ঝলমলে ইনিংস, যা সাজান দুটি চার ও চারটি ছক্কায়।
সাইফ ফিরে গেলে দায়িত্ব নেন তাওহিদ হৃদয়। মরুর বুকে তিনি হুল ফুটিয়েছেন লঙ্কান বোলারদের বুকে, ফুল ফুটিয়েছেন বাংলার ভক্তদের মনে। দুশমন্ত চামিরার বলে লেগবিফোর হওয়ার আগে করে গেছেন নিজের কাজ। ৩৭ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় করেছেন ৫৮ রান। যাতে সহজ হয় জয়ের পথ। শেষ ওভারে যদিও খেলা জমিয়ে তোলেন শানাকা। জাকের আলী ও শেখ মেহেদিকে বিদায় করে বাড়ান উৎকন্ঠা। নাসুম এসে তা দূর করেন। বাংলাদেশ পায় রুদ্ধশ্বাস জয়।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে হাসারাঙা ও শানাকা পান দুটি করে উইকেট।
এর আগে, ব্যাট হাতে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন দুই লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। ৫ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ৪৪ রান। ১৫ বলে ২২ করা নিশাঙ্কাকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সাইফ হাসানের ক্যাচ নিলে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ অপর ওপেনার কুশল থামেন ২৫ বলে ৩৪ রান করে। তাকেও তালুবন্দি করেন সাইফ, এবার বোলার শেখে মেহেদি। ৫ রান করা কামিল মিশারাকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মেহেদি।
মাঝের ওভারগুলোতে লঙ্কানরা একটু রয়েসয়ে খেলে। এর মাঝে কুশল পেরেরাকে সাজঘরের পথ দেখান মুস্তাফিজুর রহমান। ১৬ বলে ১৬ রান করে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন পেরেরা। ৯৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কার হাল ধরেন দাসুন শানাকা। অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে ২৭ বলে ৫৭ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন শানাকা। ১২ বলে ২১ করে রান আউটের কাটা পড়েন আসালাঙ্কা।
একপ্রান্তে অবিচল থাকেন শানাকা। ৩৭ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাটে চড়েই লঙ্কানরা পায় লড়াইয়ের পুঁজি।
বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজে পেয়েছেন তিন উইকেট। মেহেদি দুটি ও তাসকিন নেন এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৬৮/৭ (নিশাঙ্কা ২২, কুশল মেন্ডিস ৩৪, মিশারা ৫, কুশল পেরেরা ১৬, আসালাঙ্কা ২১, কামিন্দু মেন্ডিস ১, হাসারাঙ্গা ২, শানাকা ৬৪*, ভেল্লালাগে ০*; শরিফুল ৪-০-৪৯-০, নাসুম ৪-০-৩৬-০, মেহেদি ৪-০-২৫-২, মুস্তাফিজ ৪-০-১৯-৩, তাসকিন ৪-০-৩৭-১)।
বাংলাদেশ : ১৯.৫ ওভারে ১৬৯/৬ (তামিম ০, সাইফ ৬১, লিটন ২৩, হৃদয় ৫৮, জাকের ৯, মেহেদি ০, শামিম ১৪*, নাসুম ১*; থুসারা ৪-০-৪২-১, চামিরা ৪-০-৩২-১, ভেল্লালাগে ৪-০-৩৬-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-২২-২, শানাকা ২.৫-০-২১-২, কামিন্দু মেন্ডিস ১-০-১৬-০)।
ফলাফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।