ওয়েলস-প্রবাসী দুই ফুটবলারের গল্প

সিলেট শহরে কাছাকাছি দূরত্বে রিজওয়ান আহমেদ আর আকমল আলীর পৈতৃক বাড়ি। দুজনের বয়সও কাছাকাছি। বহুদিন আগে তাঁদের মা-বাবা পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে। দুজনের তখন জন্মও হয়নি। দুজনেরই ওয়েলসে জন্ম, বেড়ে ওঠা, ফুটবলে হাতেখড়ি। কিন্তু নাড়ির টান কি অগ্রাহ্য করা যায়! বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার টানে দুজনই এখন ঢাকায়। লক্ষ্য, জাতীয় দলের জার্সি পরা।
২০ বছর বয়সী দুই তরুণ ঢাকায় এসেছেন গত বুধবার। আপাতত জাতীয় দলের ক্যাম্প নেই বলে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছেন তাঁরা, বাফুফের কোচ সাইফুল বারী টিটুর অধীনে। আগামী ১৩ আগস্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার পর জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই অবশ্য ৮ আগস্ট ওয়েলসে ফিরে যাবেন রিজওয়ান-আকমল। আগস্টের মাঝামাঝি নেদারল্যান্ডস থেকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ ফিরলে আবার তাঁদের ডাকা হবে।
দুজনের কেউই এখনো আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল দেননি। তবে যতটা দেখেছেন তাতে দুই ডিফেন্ডারকেই ভালো লেগেছে টিটুর, ‘আসল পরীক্ষা নেবেন ডি ক্রুইফ। তিনি দেখেই ঠিক করবেন, তাঁরা জাতীয় দলের জন্য কতটা যোগ্য। তবে আমার ভালোই মনে হচ্ছে দুজনকে। বয়স কম হওয়া তাঁদের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট।’
জাতীয় দলে সুযোগ পেলে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী আকমল, ‘জানি না জাতীয় দলে সুযোগ পাব কি না। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দলে জায়গা পেলে ভালো কিছু করে দেখাতে পারব। সে আত্মবিশ্বাস আমার আছে।’
রিজওয়ানও জাতীয় দলের জার্সি পরতে উন্মুখ, ‘নিজের দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারা গর্বের বিষয়। সে কারণে প্রিয় দেশের হয়ে খেলতে ঢাকায় চলে এলাম।’
দুজনের বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ জাগে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক ফুটবলারের পরামর্শে। আতিফ নামের সেই ফুটবলার পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। ওয়েলসে আতিফের সঙ্গে দুজনের দেখা হয়েছিল। তাঁর পরামর্শেই দেরি না করে ঢাকায় চলে আসেন দুজনে। আগেও কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন আকমল-রিজওয়ান। তবে এবার এসেছেন লাল-সবুজকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন নিয়ে।
জাতীয় দলে খেলার বাসনা নিয়ে আগেও চারজন প্রবাসী ফুটবলার ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ডেনমার্ক-প্রবাসী জামাল ভূঁইয়াই শুধু সফল। দুই বছর ধরে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত সদস্য এই মিডফিল্ডার। এ মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়েও খেলেছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ফারহান খান, রিয়াসাত খাতুন ও আনন্দ রহমান ‘রণে ভঙ্গ’ দিয়ে ফিরে গেছেন প্রবাস-জীবনে।