রাশিয়া-কাতারে বিশ্বকাপ নয়?

ফিফা কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে ফুটবল-বিশ্বে। এরই মধ্যে ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ রাশিয়া ও কাতারকে দিতে অবৈধ অর্থ লেনদেন করা হয়েছিল বলে গুঞ্জন উঠেছে। এই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেলে আয়োজক হওয়ার সুযোগ হারাতে পারে রাশিয়া ও কাতার। সুইজারল্যান্ডের একটি পত্রিকাকে এমন কথাই বলেছেন ফিফার এক কর্মকর্তা।
গত মাসে ফিফা সভাপতি নির্বাচনের দুই দিন আগে মার্কিন বিচার বিভাগের অনুরোধে ফিফার সাত কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে সুইস পুলিশ। ফিফার সদর দপ্তরে হানা দিয়ে জব্দ করেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। সাবেক সহসভাপতি জ্যাক ওয়ার্নারের বিরুদ্ধেও উঠেছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ।
এর পর থেকেই রাশিয়া ও কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়ার পেছনে কোনো ‘বাঁ হাতে কাজ’ ছিল কি না, সেই সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফিফা কর্মকর্তা ডোমিনিকো স্কালা বলেছেন, ‘যদি এমন প্রমাণ পাওয়া যায় যে ঘুষের বিনিময়ে রাশিয়া ও কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাহলে তা বাতিল করা হতে পারে।’ তবে এমন কোনো প্রমাণ যে এখনো পাওয়া যায়নি, সেটাও উল্লেখ করেছেন এই ফিফা কর্মকর্তা।
রোববার প্রকাশিত বিবিসির একটি বিশেষ প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে ওয়ার্নারের ঘুষ লেনদেনের হিসাব। সেখান থেকে প্রশ্ন উঠেছে ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ নিয়েও। নথিপত্র থেকে দেখা যায়, বিশ্বকাপ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে এক কোটি ডলার নিয়েছিলেন ওয়ার্নার।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই এক কোটি ডলার ওয়ার্নারকে দেওয়া হয়েছিল আফ্রিকান ফুটবলের উন্নয়নের লক্ষ্যে। কিন্তু বিবিসি প্রতিবেদনের দাবি, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন ওয়ার্নার। ফিফার গ্রেপ্তার হওয়া সাত কর্মকর্তার মধ্যে ওয়ার্নার অন্যতম। ৭২ বছর বয়সী এই ফুটবল প্রশাসক বর্তমানে চার লাখ ডলারের বিনিময়ে জামিনে আছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার পত্রিকা সানডে টাইমসের আরেকটি প্রতিবেদনে ২০০৭ সালে আদান-প্রদান হওয়া কিছু ই-মেইলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ফিফা ও দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার ও থাবো এমবেকি এই এক কোটি ডলার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এদিকে, ২০০৪ সালে ফিফা মিসরের কাছেও ঘুষ চেয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী আলী এদিন হেলাল। তিনি বলেছেন, ‘ফিফার পক্ষ থেকে ওয়ার্নার আমাদের কাছে এসেছিলেন। তিনি আমাদের অন্তত সাতটি ভোট পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। তবে প্রতিটি ভোটের জন্য দাবি করেছিলেন ১০ লাখ ডলার করে।’ সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন হেলাল। ২০১০ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার দৌড়ে মিসরের ভাগ্যে একটিও ভোট জোটেনি।