পুঁজিবাজার ধ্বংসে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা : বিএসইসি কমিশনার

পুঁজিবাজার ধ্বংসে যেসব চক্র সক্রিয় এবং যাদের কারণে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার এম আলী আকবর। আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) সাভারের ব্র্যাক সিডিএমে দুদিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএম) সদস্যদের জন্য বিএসইসি দুই দিনের আবাসিক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ, নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএম) সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলীসহ অন্যান্যরা।
কর্মশালার শুরুতে ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম।
এম আলী আকবর বলেন, ‘বর্তমানে পুঁজিবাজারের মাঠ খেলার জন্য পুরো প্রন্তুত। যারা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য ভালো ফল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আপনি খেলতে আসছেন না কেন? কোন ধরনের মাঠ চান, যে মাঠে ফাউল হবে আপনি সে মাঠে খেলবেন।’
কমিশনার আলী আকবর বলেন, ‘সাধারণভাবে প্রশ্ন জাগে, বিএসইসি এত জরিমানা কেন করে? যখন কেউ আইন বা বিধি লঙ্ঘন করে তখনই পেনাল্টি করা হয়। যে বা যারা পুঁজিবাজারকে ধ্বংস করবে বা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে এটা আগেও করা হয়েছে কৌশলে, অথবা করা হয়নি।’ তিনি বলেন, সত্য সুন্দরের সঙ্গে অসত্যকে মিশ্রণ করা যাবে না।
যিনি জরিমানা পরিশোধে রাজি, তার কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে আলী আকবর বলেন, ‘তবে যিনি আপিল করবেন, সেটিও তার অধিকার। কমিশনের পক্ষে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করা সম্ভব নয়। পুঁজিবাজার ধ্বংসে যেসব চক্র সক্রিয় ও যাদের কারণে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএসইসি কমিশনার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এনফোর্সমেন্টের প্রয়োজন, এটা না করলে বাজারকে সঠিকপথে রাখা যাবে না। পেনাল্টির ব্যাপারে দুটো অপশন—একটি আমাদের পেনাল্টির টাকা আপনি দিয়ে দেবেন, অপরটি হলো—টাকা না দিয়ে আপনি আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। তবে পেনাল্টির টাকা একদিন একসময়ে আদায় হবেই।’
এম আলী আকবর বলেন, ‘বিশ্বাস বা কনফিডেন্স কখন কোন বিষয়ে কার ওপর হয়, সেটা কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন না। এই মার্কেটের ব্যাপারে কোনো ধরনের নেতিবাচক ভূমিকা বিএসইসির নেই। আমরা চাই, মার্কেট ভালো হোক।’
অনুষ্ঠানে বিএসইসি কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, ‘পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিএসইসি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে সাংবাদিকদের রিপোর্ট আমাদের বড় সহায়তা করে। অনেক সময় সাংবাদিকরা ব্যক্তিগতভাবেও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। আজকের এই প্রশিক্ষণ তাদের আরও কার্যকর রিপোর্টিংয়ে সহায়তা করবে বলে মনে করি।’
সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাজার উন্নয়নে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সময়োপযোগী।