Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

ভিডিও
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
সকাল বেলার নিমন্ত্রণে : পর্ব ০১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৯
নাটক : সত্য বলা মহাপাপ
নাটক : সত্য বলা মহাপাপ
এই সময় : পর্ব ৩৮৪০
এই সময় : পর্ব ৩৮৪০
গানের বাজার, পর্ব ২৩৮
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭
আপডেট: ০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭
আরও খবর
সাদাসিধে কথা: পাঠ্যবই দিয়ে শুরু, শেষ কোথায়?
সাদাসিধে কথা: আমার কেন আর দুর্ভাবনা নেই

সাদাসিধে কথা

শাহানার জীবনের একদিন

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭
আপডেট: ০০:১০, ২৫ আগস্ট ২০১৭

মা গাছে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। শাহানা নিচু হয়ে মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘এখন কেমন লাগছে মা?’ মা চোখমুখে একটু অপরাধীর মতো হাসলেন, বললেন, ‘ভাল। হঠাৎ করে এতখানি পথ হেঁটে একটু হাঁপিয়ে গেছি। আর কিছু নয়।’ শাহানা অভিযোগের স্বরে বলল, ‘আমি এত করে বললাম তোমার আমার কোন দরকার নেই, তুমি আমার কথা শুনলে না। আমাকে নিয়ে চলে এলে! এখন যদি শরীর খারাপ হয়?’ মা দুর্বলভাবে হাসলেন, বললেন, ‘তোর বাবা বেঁচে থাকলে তোকে নিয়ে আসত না? এখন আমি তোকে একা আসতে দিই কেমন করে?’

শাহানা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তার বাবা গত বছর হঠাৎ করে দু’দিনের জ্বরে মারা গেছেন। ব্যাংকে একটা ছোট চাকরি করতেন, টেনেটুনে কোনভাবে সংসার চলত। বাবা মারা যাওয়ার পর হঠাৎ করে মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। শাহানা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষাটাও ভাল করে দিতে পারেনি। পরীক্ষার রেজাল্ট মোটামুটি হয়েছে এখন শুরু হয়েছে ভর্তিযুদ্ধ।

ভর্তি পরীক্ষাকে সবাই তামাশা করে কেন ভর্তিযুদ্ধ বলত শাহানা আগে বুঝত না ভর্তি পরীক্ষা দিতে শুরু করার পর সে এখন বুঝতে পারছে। আসলেই একটা যুদ্ধের মতো, তার মতো ছেলেমেয়েদের যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে, তারা যুদ্ধে বেঁচে থাকবে কী-না তাতে কিছু আসে যায় না। শাহানার মতো ছেলেমেয়েরা যুদ্ধ করছে একা একা এই দেশের কেউ তাদের পাশে নেই।

শাহানা চোখের কোণা দিয়ে একবার তার মায়ের হাতের দিকে তাকাল, খালি হাত দুটো দেখতে কেমন জানি লাগছে। তার ভর্তি পরীক্ষার খরচ যোগাড় করার জন্য সোনার চুড়ি দুটো বিক্রি করে দিয়েছেন। সে মাকে নিষেধ করেছিল, বলেছিল কাছাকাছি এক-দুইটা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেখে, চান্স পেলে পাবে, না পেলে নাই। মা রাজি হননি, বলেছেন, ‘তোর বাবার খুব শখ ছিল তার মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে পড়বে। একটু চেষ্টা করি।’

সে জন্য শাহানা একটার পর আরেকটা ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়া অনেক খরচের ব্যাপার। সস্তা হোটেলে থাকতেও অনেকগুলো টাকা বের হয়ে যায়। খরচ বাঁচানোর জন্য স্টেশনেও একবার রাত কাটিয়েছেন। এত কষ্ট করার পরও যদি কোন একটা ইউনিভার্সিটিতে চান্স না পায় তখন কী হবে? শাহানা জোর করে তার মাথা থেকে চিন্তাটা দূর করে দেয়।

ভোরবেলা মা আর মেয়ে এই ইউনিভার্সিটিতে এসেছে ভেবেছিল ইউনিভার্সিটির কোন বিল্ডিংয়ের একটা বাথরুম ব্যবহার করবে। হাত-মুখ একটু ধুয়ে নেবে। কিন্তু বিল্ডিংয়ের গেটের সামনে কলাপসিবল গেট বন্ধ করে রাখা, গেটের সামনে একজন দারোয়ান দাঁড়িয়ে আছে তাদের ঢুকতে দেয়নি। তাই মা আর মেয়ে এই গাছের তলায় বসে আছে।

আস্তে আস্তে আরও ছেলেমেয়েরা আসতে শুরু করেছে। সঙ্গে তাদের বাবা-মা। সামনের খালি মাঠটাতে গাড়ি এসে পার্ক করছে। বড় লোকের ছেলেমেয়েরা সে সব গাড়ি থেকে নামছে, তাদের হাসি খুশি ভাবভঙ্গি বাবা-মায়ের সুখী সুখী চেহারা। শাহানা তাদের দিকে তাকিয়ে একটা নিঃশ্বাস ফেলল।

একজন ঝালমুড়ি বিক্রি করছে। মা তার কাছ থেকে ঝালমুড়ি কিনলেন। মা আর মেয়ে সেই ঝালমুড়ি দিয়ে সকালের নাশতাটা সেরে নিল। শাহানা তার হাতের বইটা খুলে একটু পড়ার চেষ্টা করল। পড়ে কি হবে? ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো আসে গাইড বই থেকে- গাইড বই পড়ার ইচ্ছা করে না।

এক সময় বিল্ডিংগুলোর গেট খুলে দেয়া হলো। ছেলেমেয়েরা গেটের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়েছিল। গেট খুলে দিতেই সবাই হুড়মুড় করে ঢুকতে থাকে, মনে হয় একটু দেরি করলেই বুঝি আর তাদের পরীক্ষা দিতে দেবে না। এক-দু’জন অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়ের সঙ্গে ভেতরে ঢুকতে চাইছিল গেটের দারোয়ান তাদের আটকে দিল।

শাহানা ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢুকে যায়। অ্যাডমিট কার্ডের উল্টোপিঠে ক্লাসরুমের নম্বর লেখা আছে, সেটা দেখে শাহানা রুমটা খুঁজে বের করল। ভেতরে ছেলেমেয়েরা ডেস্কের ওপর রোল নম্বর দেখে নিজেদের সিট খুঁজে বের করে বসে পড়ছে। শাহানা নিজেও তার সিটটি খুঁজে বের করে সেখানে বসে পড়ল। ঘরের শেষ মাথায় দেয়ালের কাছে নিরাপদ একটা ডেস্ক।

শাহানা সেখানে বসে চারদিকে তাকাল, ইউনিভার্সিটি শুনলেই তার চোখের সামনে আলোকোজ্জ্বল ঝকঝকে আনন্দময় একটা দৃশ্য ফুটে উঠত, অথচ কী আশ্চর্য, সে দেখছে কেমন যেন মলিন দীনহীন একেকটি ক্লাসরুম। ময়লা মেঝে, দেয়ালের কোনায় কোনায় মাকড়শার জাল। শাহানা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণের মাঝে সে তার চার নম্বর ভর্তি পরীক্ষা দেবে। এটি হচ্ছে ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা। বিকেলে হবে ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা।

‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষার সেন্টার এখানকার একটা কলেজে, কলেজটা কোথায় কে জানে! খুঁজে বের করতে পারবে তো? পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েই তাদের ছুটতে হবে বাস স্টেশনে। রাতের বাসে সারারাত জার্নি করে তারা পৌঁছায় দেশের আরেক মাথায়, সেখানে শাহানা আরও একটা ভর্তি পরীক্ষা দেবে। দুটো ইউনিভার্সিটিতে একই দিনে ভর্তি পরীক্ষা, তাকে একটা বেছে নিতে হয়েছে।

শাহানা বুঝতে পারে না একই দিনে দুটো ইউনিভার্সিটিতে কেমন করে ভর্তি পরীক্ষা হয় ছেলেমেয়েরা তাহলে কেমন করে দুটোতে পরীক্ষা দেবে? ইউনিভার্সিটিতে এত জ্ঞানী-গুণী প্রফেসররা থাকেন, তারা এই সহজ ব্যাপারটা বুঝতে পারেন না সেটি কেমন করে হতে পারে?

শাহানা জোর করে তার মাথা থেকে চিন্তাটা দূর করে দিল। মাথা ঠাণ্ডা রেখে তার আজকের পরীক্ষাটা দিতে হবে। তার বাবার খুব শখ ছিল যেন শাহানা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারে। একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে তার পড়ার ক্ষমতা নেই, কোনভাবে যদি পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারে তাহলে দু’-একটা টিউশনি করে সে কোনভাবে হয়ত পড়ার খরচটা চালিয়ে নিতে পারবে। তার বাবার স্বপ্নটা পূরণ করতে পারবে। শাহানা চুপচাপ অপেক্ষা করতে থাকে।

০২.

বাস স্টেশনে মা আর মেয়ে নিঃশব্দে বসে আছে। আটটার সময় বাস ছাড়বে, বাসটি এখনও আসেনি। ভাল এসি বাস আছে কিন্তু তার অনেক ভাড়া। এক রাতের জন্য এতগুলো টাকা নষ্ট করার কোন অর্থ হয় না।

আজকে সে দুটো ইউনিটে পরীক্ষা দিয়েছে। মাকে বলেনি কিন্তু পরীক্ষা ভাল হয়নি। রাজ্যের আজেবাজে প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা, উত্তরগুলো মুখস্থ করে আসতে হয়, কে এত মুখস্থ করবে? এই পরীক্ষায় তারা ভাল করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবে তারা কী আসলেই ভাল ছাত্র-ছাত্রী? শাহানা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। কালকের ভর্তি পরীক্ষাটা তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুনেছে এখানে প্রশ্নগুলো নাকি তুলনামূলকভাবে ভাল হয়, মাথা খাটিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। যেখানে মাথা খাটাতে হয় সেখানে শাহানা ভাল করে।

বাস স্টেশনের সামনে একটা বাস এসে দাঁড়াল। এটা তাদের বাস। মাকে নিয়ে শাহানা বাসের দিকে এগিয়ে যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর মা অনেক কাহিল হয়ে গেছেন। পর পর বাসে করে এক শহর থেকে আরেক শহরে ছোটাছুটি করতে গিয়ে আরও কাহিল হয়ে গেছেন। শাহানা নিজেও খুব ক্লান্ত হয়ে আছে কিন্তু মাকে সেটা বুঝতে দিচ্ছে না, মা তাহলে দুশ্চিন্তা করবে।

বাসের মাঝামাঝি পাশাপাশি দুটো সিটে মা আর মেয়ে বসে পড়ল। মা বললেন, ‘শাহানা, তুই আমার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়িস। পরীক্ষার আগের রাতে ভাল করে ঘুমাতে হয়।’ শাহানা হাসার চেষ্টা করল, বলল, মা তোমার ধারণা এই বাসে সত্যি ঘুমানো সম্ভব?

মা বললেন, ‘দরকার হলে সব করতে হয়। শাহানা আর কথা বাড়াল না, বলল, ঠিক আছে মা যদি ঘুম পায় আমি তোমার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যাব।’

বাস ছাড়তে বেশ দেরি করল। শাহানা মনে মনে একটা দুর্ভাবনায় পড়ে যায় যদি বাসটা সময়মতো পৌঁছাতে না পারে তাহলে কী হবে? সে জোর করে মাথা থেকে দুর্ভাবনাটা সরিয়ে দেয়, খুব ভোরে পৌঁছে যাওয়ার কথা, একটু দেরি হলেও হাতে যথেষ্ট সময় থাকবে।

বাসটা শহরের ট্রাফিক জ্যামের ভেতর দিয়ে চলতে চলতে এবং থামতে থামতে এগুতে লাগল। শেষ পর্যন্ত শহরের ট্রাফিক জ্যাম পার হয়ে বাসটা হাইওয়েতে উঠে যায়। শাহানা তখন একটু নিশ্চিন্ত হলো। রাতের অন্ধকারে বাসটা ছুটতে থাকে, উল্টো দিক থেকে দৈত্যের মতো বাস ট্রাক আসছে, তাদের হেড লাইটের তীব্র আলোতে চোখ ঝলসে উঠছে তার মাঝে তাদের বাস ড্রাইভার রীতিমতো পাগলের মতো বাস চালিয়ে নেয়, মাঝে মাঝেই বাসটা বাম দিকে আবার ডান দিকে বাঁক নিচ্ছে। বাসের ভেতর প্যাসেঞ্জাররাও একবার ডান দিকে আরেকবার বাম দিকে কাত হয়ে যাচ্ছে। ঠিক সে রকম অবস্থাতেই মা ফিসফিস করে শাহানাকে বলেন, মা, তুই একটু ঘুমানোর চেষ্টা কর।

শাহানা বলল, ‘করছি মা।’ তারপর সে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করল। সে ভেবেছিল তার চোখে বুঝি ঘুম আসবেই না কিন্তু বাসের ঝাঁকুনি এবং ডানে-বামে কাত হয়ে যেতে যেতে এক সময় সত্যি সত্যি সে ঘুমিয়ে পড়ল।

তবে ঘুমটা হলো ছাড়া ছাড়া, বাসটা যখনই থামছিল তখনই তার ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছিল। বাসটা আবার যখন চলতে শুরু করে তখন আবার সে ছাড়া ছাড়া ভাবে একটুখানি ঘুমিয়ে পড়ে। আধো ঘুম আধো জাগা অবস্থায় সে বাস ড্রাইভারের গলার স্বর, হেলপারের চেঁচামেচি প্যাসেঞ্জারদের ঝগড়ার শব্দ শুনতে পায়। এক সময় মনে হলো বাসটা বুঝি অনেকক্ষণ থেকে থেমে আছে। শাহানা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে বাস থেকে অনেক প্যাসেঞ্জার নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। শাহানা ভয় পাওয়া গলায় মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কী হয়েছে মা?’

মা বললেন, ‘বুঝতে পারছি না, মনে হচ্ছে বাসটা নষ্ট হয়ে গেছে।’ শাহানা রীতিমতো আর্তনাদ করে উঠল। বলল, ‘নষ্ট হয়ে গেছে? এখন কী হবে।’

মা কোন উত্তর দিলেন না। কী উত্তর দেবেন বুঝতে পারছেন না। শাহানা জানালা দিয়ে গলা বাড়িয়ে অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করল। প্যাসেঞ্জারদের কথা শুনে বুঝতে পারল, আরেকটা বাস এসে তাদের নিয়ে যাবে। ততক্ষণ তাদের অপেক্ষা করতে হবে। শুধু তাই নয়, জায়গাটা নাকি ভাল নয়। মাত্র ক’দিন আগে এখানে নাকি বাস থামিয়ে ডাকাতি হয়েছে।

দুশ্চিন্তায় শাহানার শরীর খারাপ হয়ে যায়। যদি সময়মতো পৌঁছতে না পারে তাহলে কি হবে?

০৩.

শাহানা সময়মতো পৌঁছাতে পারল না, তিন ঘণ্টা দেরি হয়ে গেল। পরীক্ষা শুরু হতে আধ ঘণ্টা বাকি এর মাঝে তারা অনেক কষ্টে একটা সিএনজিকে রাজি করিয়ে সেটা নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে এসেছে। সিএনজি থেকে নেমে সে যখন তার পরীক্ষার কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছে ততক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। কেন্দ্রের দরজায় ভারি কলাপসিবল গেটটা টেনে রাখা আছে। সেখানে একজন দারোয়ান দাঁড়িয়ে আছে। শাহানা ছুটতে ছুটতে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘গেটটা খোলেন, আমি ঢুকব।’

দারোয়ান নিরাসক্ত গলায় বলল, পনেরো মিনিট আগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। এখন ঢোকা যাবে না।

শাহানা কাতর গলায় বলল, ‘প্লিজ আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। আমাদের বাস নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। গেটটা খোলেন, আমাকে ঢুকতে দেন।’

দারোয়ান মাথা নাড়ল, বলল, ‘উঁহু। এখন আর ঢুকতে দেয়া যাবে না। নিয়ম নেই।’

শাহানা চোখের পানি আটকে রেখে বলল,

‘প্লিজ! প্লিজ! আমাকে ঢুকতে দেন।’

দারোয়ান রাজি হলো না, উল্টো ধমক দিয়ে বলল, ‘এখানে গোলমাল কর না। যাও।’

ঠিক তখন গেটের সামনে একটা গাড়ি এসে থামল এবং গাড়ির ভেতর থেকে স্যুট-টাই পরা একজন মানুষ নামল। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন।

দারোয়ান ব্যস্ত হয়ে শাহানাকে বলল, ‘সর, সর সামনে থেকে। ভাইস চ্যান্সেলর স্যার এসেছেন।’

দারোয়ান গেট খুলে দিল এবং তখন স্যুট-টাই পরা ত্যালত্যালে চেহারার একজন মানুষ এগিয়ে এলো। মানুষটার মাথার চুল মাঝখানে সিঁথি করে দুই দিকে ভাঁজ করে রাখা, পকেট থেকে সবুজ রঙের একটা চিরুনি বের করে মানুষটা তার চুল আচড়াতে আচড়াতে হেঁটে হেঁটে আসতে থাকে। তার পেছনে পেছনে আরও কয়েকজন মানুষ এগিয়ে আসে।

শাহানা তখন ছুটে স্যুট-টাই পরা মানুষটার কাছে এগিয়ে যায়, কাতর গলায় বলে, ‘প্লিজ আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেন। পরীক্ষা দিতে দেন।’

ত্যালেত্যালে চেহারার ভাইস চ্যান্সেলর বললেন, ‘ননসেন্স। যাও সব যন্ত্রণা। সরে যাও এখান থেকে। পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে জানো না? সময়মতো আসতে পার না?’

শাহানাকে ঠেলে সরিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর এগিয়ে গেল। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে ভাইস চ্যান্সেলরের মুখটা আবার হাসি হাসি হয়ে উঠল। ভর্তি পরীক্ষায় তার কোন কাজ নেই, কোন দায়িত্ব নেই। তিনি শুধু পরীক্ষার হলগুলো ঘুরে দেখেন। এ জন্য তাকে আশি হাজার টাকা দেয়া হয়!

শাহানার কী হলো কে জানে, সে হঠাৎ ছুটে এসে ভাইস চ্যান্সেলরের সামনে দাঁড়াল। অবরুদ্ধ অশ্রু আটকে রেখে চিৎকার করে বলল, ‘না, না, না। আপনারা আমার জীবনটা নষ্ট করতে পারেন না পারেন না’।

দারোয়ান ছুটে এসে শাহানাকে ধরে টেনে সরিয়ে নিল।

০৪.

এটা একটা কাল্পনিক গল্প কিন্তু এ রকম ঘটনা অসংখ্যবার ঘটছে। বাংলাদেশের অসংখ্য পাবলিক ইউনিভার্সিটির গুরুত্বপূর্ণ ভাইস চ্যান্সেলর আর প্রফেসররা কী জানেন এই দেশের হাজার হাজার শাহানারা তাদেরকে তাদের সর্বগ্রাসী লোভের জন্য অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছে? মাননীয় রাষ্ট্রপতির অনুরোধ রক্ষা করে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেয়া কী এতই অগ্রহণযোগ্য একটা প্রস্তাব?

লেখক : অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...
  2. ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির
  3. বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক
  4. বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল
  5. মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই
  6. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
সর্বাধিক পঠিত

ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...

ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির

বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক

বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল

মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই

ভিডিও
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯১
সকাল বেলার নিমন্ত্রণে : পর্ব ০১
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০২
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০২
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x