অভিমত
অভিশংসন, সংসদ ও সর্বোচ্চ আদালতের রায়

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দায়িত্বে বা উচ্চ দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিকে অভিযুক্তকরণের প্রক্রিয়াকে অভিশংসন (Impeachment) বলা হয়। একে অপসারণ প্রক্রিয়াও বলা যেতে পারে। এ অভিশংসনের আওতায় আসতে পারে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকগণ এবং সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ। অভিশংসনের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে কর্তব্যে চরম অবহেলা, দুর্নীতির অভিযোগ, অসদাচরণ এবং রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি।
প্রতিটি দেশের সংবিধানে এতদসম্পর্কিত বিধিবিধান রয়েছে। প্রথাগতভাবে উন্নত গণতন্ত্রে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সংসদে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। অবশেষে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় উচ্চ পরিষদে। ব্রিটেনে অভিযোগ উত্থাপিত হয় হাউস অব কমন্সে। আর বিচার করে হাউস অব লর্ডস। এসব দেশে অভিশংসনের ঘটনা খুবই বিরল। ১৬৬৬ সালে হাউস অব কমন্স তৎকালীন ‘রাজার মুখ্যমন্ত্রী’ (এখনকার প্রধানমন্ত্রী) আর্ল অব দানবেকে অভিশংসন করেন। অভিযোগ ছিল ফ্রান্সের সঙ্গে অসম চুক্তি আলোচনার। হাউস অব লর্ডস তাকে শাস্তি দিতে অস্বীকার করে। তবে তিনি পদচ্যুত হন। ব্রিটেনে গত ২০০ বছরে মাত্র দুটি অভিশংসনের ঘটনা ঘটে। ১৭৮৬ সালে ভারতে দুঃশাসনের জন্য ওয়ারেন হেস্টিংসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ১৮০৬ সালে সরকারি অর্থ আত্মসাতের জন্য লর্ড মেল ভাইল অভিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালত অভিশংসনসহ সব ক্ষেত্রে ক্ষমতায়িত হয়েছে।
একই ধারায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিশংসনের সার্বিক ক্ষমতা প্রতিনিধি পরিষদের কাছে ন্যস্ত। আগেই বলা হয়েছে, বিচারিক ক্ষমতা উচ্চ পরিষদ বা সিনেট সংরক্ষণ করে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সিনেট যখন বিচারিক কার্যে একক কমিটি (Committee of the whole house) হিসেবে কাজ করে তখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এতে সভাপতিত্ব করেন। সুতরাং সর্বোচ্চ আদালতের কর্তৃত্ব লক্ষণীয়। একশ সদস্যের সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৭৮৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র সাতজন ফেডারেল জাজ অপসারিত হয়েছেন। ১৮৬৮ সালে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন অভিযুক্ত হন। তিনি মাত্র ১ ভোটের ব্যবধানে অভিশংসন থেকে রক্ষা পান। ১৯৭৪ সালে মূলত ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারির কারণে প্রেসিডেন্ট নিক্সন অভিযুক্ত হন। অভিশংসন নিশ্চিত জেনে তিনি সসম্মানে পদত্যাগ করেন। ১৯৯৮ সালে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত হন। কিন্তু প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের অভাবে অভিশংসন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়। তৃতীয় বিশ্বে অভিশংসনের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। বিজ্ঞজন মাত্রই জানেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচার বিভাগকে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী বলা হয়। বিচার বিভাগ সেখানে আইনের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যাকারী, যুক্তরাষ্ট্রের অভিভাবক এবং নাগরিক স্বাধীনতার বিশ্বস্ত রক্ষক। ব্রিটেনের মতো সেখানেও আইনসভার চেয়ে অভিশংসন ধরনের বিচারিক ক্ষমতা ক্রমশ বিচার বিভাগ প্রয়োগ করছে।
বাংলাদেশের সংবিধানেও অভিশংসনের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উপস্থাপিত হয়েছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫২-তে রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া বর্ণিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীগণের অভিশংসনের কথা সংবিধানে উল্লেখ নেই। সংসদীয় ধারায় অনাস্থা প্রস্তাব এবং মন্ত্রীদের পদচ্যুতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকার কারণে সম্ভবত বিষয়টি অভিশংসনের পর্যায়ভুক্ত হয়নি। সংবিধানের চতুর্থ ভাগে ৯৪ অনুচ্ছেদ থেকে ১১৩ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত বিচার বিভাগ তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠা, বিচারক নিয়োগ, বিচারক পদের মেয়াদ, বিচারকদের ক্ষমতা, অক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে।
১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে ৯৬ ধারায় বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। সংসদীয় ধারা অনুযায়ী এটি ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু ১৯৭৫ সালের চতুর্থ সংশোধনীতে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা এককভাবে রাষ্ট্রপতির ওপর অর্পিত হয়। মূল সংবিধানের দোহাই দিয়ে যাঁরা কথা বলছেন আসলে তাঁরা চতুর্থ সংশোধনীর বাস্তবতা এড়িয়ে যাচ্ছেন। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অভিশংসনের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত করেন। প্রধান বিচারপতি এবং আরো ২ জন সর্বজ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয়। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পরে ক্ষমতাসীন হলে যথেষ্ট সংযমের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। অবশ্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার কারণে তারা সংবিধান সংযোজন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনে হাত দিতে পারেনি। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে তাদের সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ আসে। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। সংবিধানের অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। তখনো তারা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখে। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। অবশ্য তখন এটা ব্যাখ্যা করা হয়নি যে অতীতে তারা এ রকম কোনো উদ্যোগ কেন গ্রহণ করেনি অথবা পঞ্চদশ সংশোধনীতে এটি কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি?
ষোড়শ সংশোধনী সংসদে পাস করা হলে বিচার বিভাগ তথা আইনজীবী ও ভুক্তভোগী মানুষের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হয় যে সরকার নিম্ন আদালত দখলের পর এখন উচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। কতিপয় আইনজীবী কর্তৃক সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করণের মাধ্যমে আইনজীবী মহলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার কথা বোঝা যায়। ওই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন নয়জন আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করে। এতে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। পরে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আপিলের ওপর ১১ দিন শুনানি শেষে গত ১ জুন সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখে। এ রায়ের ফলে সংসদের কাছে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা থাকছে না। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রাষ্ট্র পক্ষের আপিল খারিজ করে দেন।
ওই মামলায় ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি মতামত দেন। তাঁদের মধ্যে নয়জনই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে কথা বলেন। দেশের শীর্ষ এসব আইনজীবীর মধ্যে রয়েছেন—টিএইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও এম আই ফারুকী। অ্যামিকাস কিউরি আজমালুল হোসেন কিউসি সরকারের পক্ষে মত দেন। যাঁরা রিট করেছিলেন, তাঁদের বক্তব্য ছিল সংবিধানে ওই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে। অপরদিকে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ মূল সংবিধানে প্রত্যাবর্তন প্রয়োজন। সামরিক শাসক কর্তৃক সংঘটিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সংবিধানের মৌল চেতনাবিরোধী। ষোড়শ সংশোধনী জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সংসদে পাস হয়েছে। সংসদ সার্বভৌম। সুতরাং এ আইন বাতিল হতে পারে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো জাতীয় সংসদের কাছেই বিচারকদের জবাবদিহি হতে হবে। অপরদিকে রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট থেকে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনসভার কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রয়েছে। দেশের সংবিধানেও শুরুতে এই বিধান ছিল। তবে সেটি ইতিহাসের দুর্ঘটনা মাত্র। রায়ে আরো বলা হয়, কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলোতে ৬৩ শতাংশের অ্যাডহক ট্রাইবুনাল বা শৃঙ্খলা বিধায়ক পরিষদের মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের বিধান রয়েছে। হাইকোর্ট মন্তব্য করে যে বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদের ফলে দলের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারেন না। তারা দলের হাই কমান্ডের কাছে জিম্মি। নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। যদিও বিভিন্ন উন্নত দেশে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে। হাইকোর্টের মন্তব্যে আরো বলা হয়, মানুষের ধারণা হলো বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে। সে ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা দুর্বল হয়ে যাবে। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এর ফলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকবে না। আগের মতই বিচার বিভাগই বিষয়টি পরিচালনা করবে। অপরদিকে সরকারের প্রধান আইনবিদ অ্যাটর্নি জেনারেল প্রদত্ত রায়ে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আশা ছিল স্বপ্ন ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হবে। তা হলো না। রিটকারীদের আইনজীবী যেভাবে মতামত দিয়েছেন, অর্থাৎ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এই রায়ের ফলে স্বাভাবিকভাবেই কার্যকর হলো এমন মতামতের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আইনটি আপনাআপনি রেস্টর হবে না।’ সরকারের প্রধান আইনি অভিভাবক ইঙ্গিত দেন যে নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হবে। অপরদিকে বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, শাহদীন মালিক প্রমুখ আইনজীবী গণমাধ্যমে মন্তব্য করেন যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এমনি এমনিতেই প্রতিষ্ঠিত হলো। রাজনৈতিক দলগুলো এই রায়কে জনগণের বিজয় বলে অভিহিত করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রায় নিয়ে কোনো ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া না দেখানোর জন্য দলের ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিচার বিভাগ যে স্বাধীন, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং কোনো প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন নেই। সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রতিক্রিয়া তাঁর রাজনৈতিক সংযমের পরিচায়ক বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।
সাধারণভাবে মনে হয় যেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। তবে সরকার ও বিরোধীদলীয় সংশ্লিষ্ট আইনজীবীগণ মনে করেন, এর দ্বারা কোনোরকম বিরোধ বা সংঘাত সৃষ্টি হবে না। উভয় পক্ষই যদি স্ব-স্ব সীমারেখায় আবদ্ধ থাকেন তাহলে তা স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করবে। এটা একটি অপ্রিয় সত্য যে পৃথিবীর সর্বত্র, এমনকি উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে বা নিজ নিজ পক্ষপুটে নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। শাসকগণ তাঁদের সর্বোচ্চ বিবেক বিবেচনা বা স্বপক্ষের ধারণায় সুদৃঢ় থেকে এমন সব মনোনয়ন দিয়েছেন, যা সব সময় তাঁদের জন্য সুখকর হয়নি। প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ার তাঁর বিশ্বস্ত আর্ল ওয়ারেনকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়ারেন তাঁর জন্য অনেক বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি করেছিলেন। অবশেষে দুঃখ করে আইজেন হাওয়ার তাঁর মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেছিলেন ‘the biggest dam fool mistake I ever made.’ বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্ব চিরকালীন। বিচার বিভাগ চায় নির্বাহী বিভাগের লাগামকে টেনে ধরতে। অপরদিকে নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগকে একশ ভাগ নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতার বিভাজন একটি বহুল উচ্চারিত প্রতিশব্দ। অবশেষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফাইনারের মীমাংসা : Total separation of powers neither possible nor desirable.
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।