ডায়াবেটিস রোগীরা রোজার প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

ডায়াবেটিস একটি সারা জনমের রোগ। একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। সুন্দরভাবে রোজা রাখতে ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন। রোজার আগের এ প্রস্তুতি ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জটিলতা কমাতে সাহায্য করে।
রোজার কমপক্ষে ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে ডায়াবেটিস রোগীকে ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সব পরীক্ষা করিয়ে সেটি স্বাভাবিক আছে কি না, দেখতে হবে। বিশেষ করে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা (খাবার আগে ও পরে) রক্তের লিপিড/চর্বি, লিভার ও কিডনি, হার্টের কার্যকারিতা ই্ত্যাদি কেমন আছে, সেগুলোর পরীক্ষা করতে হবে। এসব স্বাভাবিক থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখা যাবে।
রোজা রাখলে ডায়াবেটিস রোগীদের কী কী হতে পারে
১. হাইপোগ্লাইসিমিয়া (রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া) ।
২. হাইপারগ্লাইসিমিয়া (রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়া) ।
৩. কিটো আসিডোসিস।
৪. মারাত্মক পানিশূন্যতা।
এগুলো হলে দ্রুত প্রাথমিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
কিছু সতর্কতা
- রোজার আগে রোগী পরীক্ষামূলক নফল রোজা পরপর তিন দিন রেখে হাইপোগ্লাইসিমিয়া অথবা হাইপারগ্লাইসিমিয়ার ঝুঁকি হতে পারে কি না বুঝে নেবেন।
- রোজার সময় নিজে নিজে ওষুধের ডোজ সমন্বয় না করে আগে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সমন্বয় করতে হবে।
- রোগী ও রোগীর সঙ্গে বসবাসকারীকে রক্তে গ্লুকোজের কমে বা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো জানতে হবে এবং তার সমাধান শিখতে হবে।
- রোজার সময় বেশি করে আঁশযুক্ত (ফল ও শাকসবজি) এবং আস্তে আস্তে রক্তে সুগার বাড়ে এমন শর্করা খাবার খেতে হবে।
- পানিশূন্যতা কমানোর জন্য বেশি করে পানি ও চিনিমুক্ত পানীয় পান করতে হবে।
- চা,কফি পরিহার করতে হবে।
- সেহরির শেষ সময় খেতে হবে, যাতে রক্তে সুগার বেশিক্ষণ স্বাবাভিক থাকে। কোনো সেহরি বাদ দেওয়া যাবে না।
- রোজায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখতে হবে। কঠিন ব্যায়াম করলে বিপজ্জনকভাবে রক্তে গ্লুকোজ বা চিনি কমে যেতে পারে। তাই খুব কঠিন পরিশ্রম করা যাবে না।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।