ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট কোম্পানি গঠনে আইন অনুমোদন

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর আদলে ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট কোম্পানি গঠন করতে এ-সংশ্লিষ্ট খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ ছাড়া ৫৫৫তম কমিশন সভায় খসড়া আইনটির ওপর মতামত নিতে স্টেকহোল্ডারদের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ক্লিয়ারিং কোম্পানি গঠনের জন্য বিএসইসির একটি প্রতিনিধিদল ৮ অক্টোবর জার্মানি ও স্পেন সফরে যাবে বলে এর আগে জানা যায়। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দেবেন বিএসইসির ক্লিয়ারিং কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।
উপমহাদেশের দেশগুলোতে পূর্ণাঙ্গরূপে ক্লিয়ারিং কোম্পানি নেই। ফলে ভারত কিংবা পাকিস্তানে সফর করার চিন্তাভাবনা থাকলেও পরে তা বাতিল করা হয়। ভারতে সিকিউরিটিজ বা কমোডিটি ক্লিয়ারিংয়ের কাজ আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান করে না। ক্লিয়ারিংয়ের কাজ দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনই করে থাকে। কিন্তু বিএসইসি স্বতন্ত্রভাবে ক্লিয়ারিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। দেশের শেয়ারবাজারে বর্তমানে শুধু সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়। ফলে স্বতন্ত্রভাবে ক্লিয়ারিং কোম্পানি গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। বর্তমানে ক্লিয়ারিংয়ের কাজ স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সমন্বিতভাবে সম্পন্ন করছে।
বিএসইসি সাম্প্রতিক সময়ে ফিউচার ট্রেডের পাশাপাশি কমোডিটি মার্কেট এবং ডেরিভেটিভ মার্কেট চালু করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। আর এসব নতুন ফিচার চালু করার জন্য সিডিবিএল বা স্টক এক্সচেঞ্জের ওপর এককভাবে নির্ভর না করে আলাদা ক্লিয়ারিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে বিএসইসি।
ক্লিয়ারিং কোম্পানি মূলত সিকিউরিটিজ বা কমোডিটির লেনদেন নিষ্পত্তি করে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় ক্লিয়ারিং কোম্পানি ক্রেতার জন্য বিক্রেতা এবং বিক্রেতার জন্য ক্রেতা হিসেবে কাজ করবে। এসব ক্লিয়ারিং কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনায় পৃথক ও স্বতন্ত্র জনবল কাঠামো থাকবে। এ প্রতিষ্ঠানে দুটি ক্যাটাগরি থাকবে। একটি ক্যাটাগরি ট্রেডিং মেম্বার হিসেবে এবং অন্যটি ক্লিয়ারিং মেম্বার হিসেবে কাজ করবে। এসব ট্রেডিং ও ক্লিয়ারিং মেম্বাররা কোনো ব্রোকারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে না। এ ছাড়া ক্লিয়ারিং কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের নির্দিষ্ট সীমাও বেঁধে দেওয়া হবে।
এর আগে বিএসইসির ৫১২তম কমিশন সভায় ক্লিয়ারিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, মাহাবুবুল আলম ও পরিচালক প্রদীপ কুমার বসাক।