কুমিল্লায় ডিসি পার্ক নিয়ে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

কুমিল্লায় ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতসহিষ্ণু জলধারার খনন ও সংরক্ষণ প্রকল্প’ সম্পর্কে অবহিতকরণ ও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম ও স্থপতি তানভীর আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, এবি পার্টির আহ্বায়ক গোলাম সামদানি, পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান প্রমুখ।
প্রকল্প সম্পর্কে অবহিতকরণের অংশ হিসেবে সভাপতির বক্তব্যে বিস্তারিত তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী কুমিল্লা শহরে ৮০০ এর মতো পুকুর ছিল, যা বর্তমানে ২০০ এর নিচে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিগত ২৩ বছরে শহরের অনেক পুকুর জলাধার ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা হয়েছে। যান্ত্রিক নগরীতে শহরের মধ্যে শ্বাস ফেলার জায়গাটুকু নেই। নগরবাসী বিশেষ করে শিশুদের জন্য পার্ক করার কথা মাথায় রেখে পতিত ভূমিতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
সিটি করপোরেশনের ছোটরা এলাকায় বন্ধ হওয়া পুরান বোটানিক্যাল গার্ডেন, চিড়িয়াখানাসহ মোট ১৯ একর খাস জমি পতিত পরে আছে। সিটি করপোরেশনের মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে সেই পতিত ভূমিতে পার্ক, লেকসহ কিছু বিনোদনমূলক রাইড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ডিসি আরও বলেন, প্রকল্পের মধ্যে পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য খালের ব্যবস্থা থাকবে। ঝিলের আদলে পদ্ম পুকুর থাকবে, যেখানে নানা ধরনের পদ্ম থাকবে। বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ রোপণ করা হবে। ১৪০ ফুট উঁচু ফেরিস হুইল থাকবে। লেকের মাঝে দুটো ঝুলন্ত সেতু থাকবে। ফ্লাওয়ার জোন থাকবে। খেলার মাঠ থাকবে। ৩ কিলোমিটার হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে থাকবে। এছাড়া ৪০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। ১৯ একরের মধ্যে ১২ একর জায়গায় ২০ ফুট খনন করে আশেপাশের পানি নিষ্কাশন হবে, বাকি ৭ একরে অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক জানান, প্রকল্পের ফান্ড নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের ১০ কোটি টাকা পরিবেশবান্ধব সহায়তা হিসেবে এবং সিটি করপোরেশন থেকে সাড়ে ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ ও জেলা পরিষদ থেকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ড্রেনসহ খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
পরে গণমাধ্যমকর্মী, সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ পার্কের স্থান পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার।