পত্নীতলায় ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ঘরবাড়ি-ফসলের মাঠ, ত্রাণ কার্যক্রম শুরু

নওগাঁর পত্নীতলায় হঠাৎ আসা প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিতে অসংখ্য ঘরবাড়ির চাল, গাছপালা এবং ফসলের মাঠ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলছে, তবে স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জরুরিভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) বেলা ১টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রায় ২৩ ঘণ্টা হয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তবে সে সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগকে কাজ করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শুরু হওয়া এই ঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ ও গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। শুরু হয় প্রবল ঝড়। এর কিছুক্ষণ পর মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রাঘাত শুরু হলে পুরো এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১০ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সচল করা হয়। কিন্তু কিছু গ্রামে রোববার বেলা ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছিল।
পত্নীতলা উপজেলার গগনপুর, ভাবিচা মোড়, ব্যাংডোম, বানিলা, বাবনাবাজ, দোচাই, শম্ভুপুর, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কয়েকটি পাড়া, রামজীবনপুর ও কাঁটাবাড়িসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সোহরাব হোসেন জানান, ঝড়ে রোপা আমনের ২০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৭৫ হেক্টর আবাদের মধ্যে কলা বাগান ৫২.৫ হেক্টর জমিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আনুমানিক আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চার কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এক হেক্টর পেঁপে গাছও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আনুমানিক ক্ষতি দেড় লাখ টাকা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান, সরজমিনে পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পাঁচ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া তালিকা প্রস্তুত করে ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণ বাবদ অর্থ দেওয়া হবে।
পত্নীতলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান মিলন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সরকারি ত্রাণের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ভুক্তভোগীদের তালিকা তৈরি করে সরকারি অনুদানের সহযোগিতা করা হবে।