আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধে ‘আলোক ফাঁদ’

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে ‘আলোক ফাঁদ’ পেতেছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম জানান, ২৪টি ব্লকের মধ্যে অন্তত ২০টিতে আলোক ফাঁদ পাতা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর আমন ক্ষেতে মাজরা, পর্চাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমানে পোকা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তারা দাবি করছেন। প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে এই পোকার আক্রমণ দেখা গেছে, যা মোট জমির শূন্য দশমিক দুই শতাংশ।
আলোক ফাঁদ ছাড়াও, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন মাঠে পরিবেশবান্ধব ‘পার্চিং’ পদ্ধতিতে গাছের ডাল, বাঁশের আগা ও কুঞ্চিসহ বিভিন্ন ডালপালা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। এতে পাখিরা সেখানে বসে ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফেলছে, যা ফসলের জন্য উপকারী বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
যদুবয়রা ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আড়াই বিঘা জমিতে ধানের চাষ করছি। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও গরমের কারণে মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছিল, কিন্তু তিনবার স্প্রে করার পর এখন অনেকটা ভালো।’
শিলাইদহ ইউনিয়নের কৃষক আবু মোতালেব জানান, কৃষি অফিসারের পরামর্শে জমিতে গাছের ডাল পোঁতার ফলে ক্ষতিকর পোকামাকড় কমেছে। পান্টি ইউনিয়নের কৃষক সুবাহান শেখ বলেন, ‘রাতে কৃষি কর্মকর্তারা আলোর ফাঁদ পাতার পর মাঠে তেমন ক্ষতিকর পোকা নেই।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৪ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হেক্টর বেশি। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ মণ ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ২০টি কৃষি ব্লকে আলোক ফাঁদ পেতে পোকা শনাক্ত করা হয়েছে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপাতত কোনো শঙ্কা নেই।