মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের জবাবে যা বলল জামায়াত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন— আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামী ৩০টি আসনে ছাড় চেয়েছিল। বিএনপি সেই প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় জামায়াত এখন পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি তুলে বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিএনপির মহাসচিবের এই বক্তব্য অসত্য ও প্রতিহিংসাপরায়ণ উল্লেখ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। জামায়াতের বিবৃতিটি হুবাহু তুলে ধরা হলো—
‘‘জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অসত্য ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ‘৩০টি আসন না দেওয়ায় পিআর নিয়ে বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে জামায়াত’ শিরোনামে প্রকাশিত জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অসত্য ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতের কোলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘এই সময়’ এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তার প্রতি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরনের সম্পূর্ণ অসত্য, অমর্যাদাকর ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বক্তব্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মত প্রবীণ রাজনীতিবিদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করতে আমাদের কষ্ট হয়। এই বক্তব্যের সঙ্গে সত্য ও শিষ্টাচারের কোনো মিল নেই। যদি এ বক্তব্য তার হয়ে থাকে, তবে বাধ্য হয়ে আমরা তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি এই বক্তব্য যদি তার হয়ে থাকে— তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কার কাছে এই আসনগুলো দাবি করেছে তার প্রমাণ জাতির কাছে উপস্থাপন করার জন্য দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আহবান জানাচ্ছি।’’
বিবৃতিতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্বাভাবিকভাবে তার মূল নেতৃত্বের অধীনে পরিচালিত হয়। কারো কাছে আসন চাওয়ার রাজনীতির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান সময়ে দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি যদি তার বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমরা আহ্বান জানাব সত্যকে মেনে নিয়ে তিনি তার বক্তব্যের জন্য ন্যূনতম পক্ষে জনগণের সামনে দুঃখ প্রকাশ করবেন।’’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ও সংগঠনের মর্যাদা সম্পর্কে তিনি যে তাচ্ছিল্যের ভাষায় কথা বলেছেন তার বিচারের ভার জনগণের আদালতের উপর ছেড়ে দিলাম। প্রিয় জনগণের ওপর আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। আমাদের কার্যক্রম দেশ ও জনগণের জন্য। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। আমাদের ভরসার মূল জায়গা মহান রবের করুণা ও সাহায্য।’
বিবৃতিতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।